ঈদে আজম কি ও কেন ঈদে মিলাদুন্নবী এর পরিবর্তে ঈদে আজম বলব?
ঈদে আজম কি ও কেন ঈদে মিলাদুন্নবী এর পরিবর্তে ঈদে আজম বলব?
===================================
শানে রেসালাত সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম আমাদের ঈমান। শানে রেসালাতের শান মান হেফাজত সব ঈমানদারের ঈমানী দায়িত্ব। শানে রেসালাতে বেয়াদবি ঈমানী অস্তিত্বের উপর আঘাত। তাই নিজেদের ঈমানী অস্তিত্বের সুরক্ষায় ও শানে রেসালাতের শান মান সমুন্নত রাখা প্রত্যেক মুমিনের সর্বোচ্চ দায়িত্ব ও আমানত।
শানে রেসালাতের বিভিন্ন শান, সিফাত, শর্ত, বৈশিষ্ট্য যেমন, আল্লাহর নূর, হাজির-নাজির, এলমে গায়েব, হায়াতুন্নবী, সালাতু সালাম ইত্যাদি অস্বীকারের সাথে সাথে শানে রেসালাতে বেয়াদবি করার জন্য বর্তমানে শানে রেসালাতের দুশমন মানবতার দুশমন ওহাবী, সালাফী, মওদুদী, শিয়া, কাদিয়ানী, ইত্যাদি বাতেল মতবাদের ধারকরা সবসময় চেষ্টা করছে শানে রেসালাতে ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দ মোবারককেও অপব্যাখ্যা করার। তারই অংশ হিসেবে তারা ঈদে মিলাদুন্নবী এই শব্দেরও অপব্যাখ্যা করে রেসালাতের শানে চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ বেয়াদবি করছে।
যেমন বর্তমানে বাতেলরা ঈদে মিলাদুন্নবী এই শব্দের আভিধানিক অর্থ জন্ম-মৃত্যু নিয়ে রেসালাতের শানে চরম বেয়াদবি, নবুয়ত অস্বীকার এবং নিজেদের মত মানুষ বলার এবং আগমনের ঈদ অস্বীকার করে মৃত্যু দিবস, শোক দিবস এবং সীরাতুন্নবী পালনের মত ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে এবং করছে (নাউজুবিল্লাহ)। আল্লাহর রাসুল সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের শানে এমন বেয়াদবি কখনো কোন মুমিন সহ্য করতে পারেনা।
যে শব্দ দ্বারা রেসালাত ও নবুয়তের শানে বেয়াদবি করা হয় সে শব্দ আমরা প্রিয়নবীর গোলামরা কখনো আর ব্যবহার করতে পারিনা যাতে ঐসব খবিছ শয়তানরা কোন বেয়াদবি করতে না পারে। আমরা এমন শব্দ চয়ন করব যেটাতে শানে রেসালাতের কোন প্রকার অবমাননা ও বেয়াদবি না হয় বরং সর্বোচ্চ শানের প্রকাশ হয়।
আমরা একটা আয়াত শরীফের শানে নযুল জানি যে কাফেররা যখন রইনা শব্দের অপব্যাখ্যা করে রেসালাতের শানে বেয়াদবি করল আল্লাহতায়ালা সাথে সাথে আয়াতশরীফ নাজিল করে রইনা শব্দ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন এবং তার জায়গায় উনজুরনা শব্দ ব্যবহার করতে বলেছেন। এখন কেউ যদি রইনা শব্দ ব্যবহার করে তার কি ঈমান থাকবে?
বিষয়টা এজন্যই আলোচনা করলাম যে ঈদে মিলাদুন্নবী যা পূর্বে আমাদের বুজুর্গানেদীন যে অর্থে ব্যবহার করতেন তা ছিল প্রিয়নবীর শুভাগমন অর্থে কিন্তু বাতেলরা বর্তমানে এই শব্দের আভিধানিক অর্থ নিয়ে রেসালাতের শানে জন্ম-মৃত্যু এইসব শব্দ ব্যবহার করছে (নাউজুবিল্লাহ)। রেসালাতের শানে জন্ম-মৃত্যু ব্যবহার ঈমানের বিপরীত।
আল্লাহতায়ালাও নিজে ঘোষণা করেছেন, তোমরা একে অপরের ক্ষেত্রে সচরাচর যে শব্দ অর্থাৎ জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার কর আমার হাবীবের শানে সেই সব শব্দ ব্যবহার করনা( সূরা নুর আয়াত ৬৩)। রেসালাতের শানে জন্ম-মৃত্যু ব্যবহার ঈমানের খেলাপ ও বিপরীত। কারণ রাসূল হায়াতুন্নবী, আবার শুধু হায়াতুন্নবীও নন আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সব হায়াতেরও উৎস ও মূল। রাসূল সর্বসময় রাসূল দুনিয়াতে আসার আগে ও পরে এমনকি সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেলেও। তাই রেসালাতে জন্ম-মৃত্যু কেউ ব্যবহার করলে সে মূলত কলেমা, কুরআনুল করীম, হায়াতুন্নবী সবকিছুই অস্বীকার করল।
সকল রহমত ও নেয়ামতের মূল উৎস, দুনিয়াতে সমগ্র সৃষ্টির জন্য আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত ও নেয়ামত প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের শুভাগমন। প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের শুভাগমনই দিয়েছে সব মানুষের আত্মা ও জীবনের মুক্তি। ঈমান, দ্বীন, নাজাত, রহমত, নেয়ামত, হেদায়াত, ইনসানিয়াত, ঈদ, গুণাবলী, সভ্যতা, জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রগতি সবকিছুর উৎস প্রাণের ঈদে আজম তথা প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের শুভাগমন।
তাই মুসলিম মিল্লাতের মহান ইমাম ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা বলেন, দুনিয়াতে প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের অতুলনীয় অদ্বিতীয় শুভাগমনের চির মহান উপলক্ষকে সাধারণ কোন শব্দে নয় আল্লাহতায়ালার সর্বোচ্চ রহমত ও নেয়ামত প্রাপ্তির পরম শোকরিয়া হিসেবে উদযাপন করতে হবে। যার সর্বোচ্চ প্রকাশ হয় ঈদে আজম হিসেবে উদযাপন করার মধ্য দিয়ে যার উর্ধ্বে আর কোন শব্দ হতে পারেনা।
শুধু তাই নয় দুনিয়াতে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী রাসূল তশরিফ এনেছেন তাঁদের প্রত্যেকের শুভাগমনই এক একটা ঈদে মিলাদুন্নবী।
সেক্ষেত্রে অন্যান্য নবী রাসুলদের শুভাগমন আর সকল নবী রাসূলের মূল নবী ও রাসূল, আল্লাহতায়ালার রাসূল প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের শুভাগমন কখনো এক নয়। তাই এই শুভাগমনকে সাধারণ কোন শব্দে নয় এমন শব্দ ব্যবহার করতে হবে যার দ্বারা আলাদা ও সর্বোচ্চ শান ও তাজিম প্রকাশ পায়। একমাত্র ঈদে আজম হিসেবেই যার সর্বোচ্চ প্রকাশ পায় যার অর্থ সর্বোচ্চ ঈদ বা খুশি। প্রাণাধিক প্রিয়নবী সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের শুভাগমনই মুমিনের জন্য পরম পাওয়া ও সর্বোচ্চ খুশির উপলক্ষ।
তাই শানে রেসালাতের সর্বোচ্চ তাজিম ও শান প্রকাশ পায় এমন শব্দই আমরা ব্যবহার করব।
আমরা যদি প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে শুভ আগমন বলি, ঈদে মিলাদুন্নবীর পরিবর্তে ঈদে আজম বলি, মিলাদ কিয়ামের পরিবর্তে সালাতু সালাম বলি ও লিখি তা একদিকে শানে রেসালাতের শান যেমন সর্বোচ্চ তুলে ধরে তেমনি বাতেলদের এইসব শব্দের অপব্যাখ্যা করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়গুলো তুলনা, জোর জবরদস্তির বা চাপিয়ে দেওয়ার কোন বিষয় নয় বরং ঈমানী হৃদয়ের উপলব্ধি ও উদারতার বিষয়।
সূত্রঃ আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমার দিশা দিকদর্শনের আলোকে লিখা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks For You Comment