মহান প্রিয় নবীকে মুমিন বলা কত টুকু সঙ্গত? -"Mafiqul Islam" ভাই


মহান প্রিয় নবীকে মুমিন বলা কত টুকু সঙ্গত
--------------------------------------------------------
 গত কয়েকদিন আগে আইনুল হুদা সাহেবের ফেসবুক বক্তব্যের মুল শিরোনাম ছিল নবী মুমিন বা মুসলমান। যারা নবী কে মুমিন বা মুসলমান মানবেনা তাদেরকে অমুসলিম ঘোষনারও দাবী জানান তিনি।  তার ডকুমেন্টারী  অনেক ভিডিও আমি শেয়ারও করেছি। যাই হউক মুল প্রসঙ্গে আসিঃ
 
কুরআনে পাকে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে কিভাবে সম্মোধন করেছেন দেখুন- ইয়া আয়্যুহাল্লাজিনা আমানু- তার অর্থ হল হে ইমানদারগণ। এখানে কারা মুমিন? যারা মহান প্রিয় নবীর উপর  পরিপুর্নভাবে বিশ্বাস করেছে নবীর সমস্ত ছিফাত সমুহকে স্বীকার করেছে( নবী হাজির নাজির, এলমে গায়েবের অধিকারী, নবী আল্লাহর নুর, নবী হায়াতুন্নবীসহ ইত্যাদি যাবতীয় সিফাত বা গুণ সমুহ)।  এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে আল্লাহ কে সবাইকে বিশ্বাস করে।হয়ত ভিন্ন নামে ডাকে। কেউ বা গড বা ইশ্বর যে যেভাবেই ডাকুক না কেন। তারা আল্লাহকেই বিশ্বাস করে। এমনকি আবু জাহেলও বিশ্বাস করত। কিন্ত তাই বলে আবু জাহেল কিন্ত ঈমানদার বা মুসলমান ছিলনা। তাহলে ঈমানদার হওয়ার পুর্বশর্ত হল নবীর প্রতি পরিপূর্ণভাবে ঈমান আনা বা বিশ্বাস করা। কেউ নবীর প্রতি ঈমান আনলেই আমরা তাকে ঈমানদার কিংবা মুমিন বলি। তার আগে নয়। 

তার প্রমান স্বরুপ হাদিস শরিফে আছেঃ লা ইউমিনু আহাদাকুম হাত্তা আকুনা আহাব্বা ইলাইহি মিন অলিদি ওয়া ওলাদি ওয়ান্নাসি আজমায়িন- তোমাদের কেউ ততক্ষন পর্যন্ত মুমিন হতে পারবেনা যতক্ষন পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের সন্তান সন্ততি, পিতামাতা এমনকি নিজের জান থেকে আমি রাসুলকে অধিক ভাল না বাসবে। (বুখারী শরিফ)

তাহলে এবার প্রশ্ন দাঁড়ায় নবী কি করে মুমিন হয়? কিংবা নবীকে মুমিন বলা কতটুকু সংগত? যার উপর বিশ্বাস করে আমরা মুমিন হলাম, সেই মহান স্বত্বাকে মুমিন বলা নবীর শানে বেয়াদবি ছাড়া আর কিছুই না।

আমরা নবীর কারনে মুমিন। অর্থাৎ নবীকে ওয়াসিলা করে বা নবীর মাধ্যম অবলম্বন করে আমরা মুমিন হলাম। এখন আমরা যদি নবীকে মুমিন বলি, তাহলে নবী মুমিন হওয়ার অন্য আরেকজনের ওয়াসিলা বা মাধ্যম প্রয়োজন। যে ওয়াসিলার মাধ্যমে নবী আল্লাহ পর্যন্ত পৌছতে পারেন। তাহলে এমন কেউ কি আছেন? অবশ্যই নেই। তাহলে নবী মুমিন কি করে হল? আর নবীকে মুমিন বললে নবীর উপর অন্য কেউ আছেন যার ওয়াসিলাতে নবী মুমিন হয়েছেন সেটাই প্রমাণ করে। (নাউজুবিল্লাহ)

কিন্ত হাকীকত হল  যা শেখ সাদী রহঃ লিখেছেন তা হলঃ বা'দ আজ খোদা বুজুর্গী তুই কিসসা মুখতাছার- খোদার পরে হল নবীর স্থান।

আবার শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তার রহঃ লিখেছেন- আকে আমাত নু ফালাক মিরাজ হু
আম্বিয়াও আওলিয়া মুহতাজ হু- ঐ নবী যার কদম মুবারক আরশে আজীম পর্যন্ত ঐ নবী কি তোমাদের মত আমাদের মত, সমস্ত আম্বিয়াকিরাম ও আওলিয়াকিরাম ঐ নবীর মুহতাজ। 

কুরআনে পাকে আল্লাহ তায়ালা মহান প্রিয় নবীকে ইয়া আইয়্যুহান্নাবীউ বলে সম্মোধন করেছেন যার অর্থ হল হ্যা নবী, হে আমার হাবীব বলে। তাহলে সম্মোধনের ভাষাই ত সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেখানে সম্মোধনের ভাষায়ই ভিন্ন সেখানে নবী কি করে মুমিন হয়? নবীকে কেন্দ্র করে আমরা মুমিন। তাইত আল্লামা ইমাম হায়াত বলে থাকেন- আমরা তাওহীদ ভিত্তিক, রেসালত কেন্দ্রিক। অর্থাৎ রাসুলকে কেন্দ্র করে আমরা তাওহীদ ভিত্তিক হয়েছি। আরো সহজ করে বললে দাঁড়ায়- তাওহীদের মুল ঠিকানা হল রেসালত। এ প্রসঙ্গে মাইইউতিয়ার রাসুলা ফাকাদ আতাআল্লাহ যার ভাবার্থ হল যে রাসুলের হয়েছে সে আল্লাহর হয়েছে। 

আমরা সুন্নীরা নবীকে আমাদের মত মানুষ বলিনা যা ওয়াহাবীরা বলে থাকে। তার কারণ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়ঃ নবী আমাদের মত। অর্থাৎ আমরা নবীর মত। (যেটা সম্পুর্ন কুফুরী)
ঠিক সেই রকম আমরা মুসলমান বা মুমিন। নবীও মুমিন। তাহলে নবী আমাদের কাতারে চলে আসেন যা নবীর শানে চরম বেয়াদবি ছাড়া কিছুই না। সেটাও কুফুরী। 
   
নবীকে মুসলমান বলা কিংবা মুমিন বলার মাধ্যমে নবীকে বড় ভাই বলার পায়তারা আর কিছুই না। কেননা কুল্লু মুসলেমিন ইখওয়াতুন- সমস্ত মুসলমান ভাই ভাই। আর নবীও যেহেতু মুসলমান নবী আমাদের বড় ভাই। (নাউজুবিল্লাহ) এইটাই ত  ওয়াহাবীদের সুত্র।

রাসুলকে রাসুল হিসেবেই মানতে হবে। সেটাই আমাদের কলেমা। রেসালতের জন্য বাশারিয়াত কোন শর্ত নয়। রেসালত প্রকাশের জন্য বাশারিয়াত শর্ত।

তাইত প্রিয়নবীর বাণীঃ ''আমি তখনও নবী ছিলাম যখন আদম আলাইহিস সালামের অস্তিত্বও ছিল না।''

কপি সম্মানিত :  Mafiqul Islam ভাই হতে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী মানে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত! লেখক- আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিশার আলোকে- আল্লামা মুফতি রেজাউল মোস্তফা কায়সার

প্রিয়নবীর সম্পর্কের চেয়ে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান অপরিহার্য্য অন্য কোন সম্পর্কই নয় -"আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা"

(দলিল) নবী রাসূল আলাইহিস সাল্লাম গন সহ আল্লাহর ওলী গন চিরন্তন জীবিত ।