মসজিদের খুৎবায় মাওলা আলি রাদ্বীয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কে গালিগালাজ করা হতো-আল্লামা আইনুল হুদা

উমাইয়্যা আমলে মিম্বরে মিম্বরে মওলা আলী রাদ্বীয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে গালি দেয়া হত ।
==============================================================

১। সা'দ ইবন আবু ওয়াককাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুআবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান (রাঃ) সা'দ (রাঃ)-কে আমীর বানালেন এবং বললেন, আপনি আলী (রাঃ)-কে কেন মন্দ বলেন না? সা'দ বললেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) তার সম্পর্কে যে তিনটি কথা বলেছেনঃ তা মনে করে আমি কখনও তাকে মন্দ বলবো না । ওসব কথার মধ্য হতে যদি একটিও আমি লাভ করতে পারতাম তাহলে তা আমার জন্য নাল উটের চেয়েও বেশি ভালো হতো । রাসুলুল্লাহ (ﷺ) -কে আলী (রাঃ)-এর উদ্দেশ্যে বলতে শুনেছি, আলী (রাঃ)-কে কোন যুদ্ধের সময় প্রতিনিধি বানিয়ে রেখে গেলে তিনি বললেন, মহিলা ও শিশুদের মাঝে আমাকে রেখে যাচ্ছেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (ﷺ)! তখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তুমি কি এতে আনন্দবোধ কর না যে, আমার কাছে তোমার মর্যাদা মুসা (আঃ)-এর কাছে হারুন (আঃ)-এর মতো। এ কথা ভিন্ন যে, আমার পর আর কোন নবী নেই! খায়বারের যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) -কে আমি বলতে শুনেছি, আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দেবো যে আল্লাহ ও তার রাসলকে ভালবাসে আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলও তাঁকে ভালবাসেন। এ কথা শুনে আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম। তখন তিনি বললেন, আলীকে ডাকো। আলী আসলেন, তাঁর চোখ উঠেছিলো। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর চোখে লালা দিলেন এবং তাঁর হাতে পতাকা অর্পণ করলেন। পরিশেষে তাঁর হাতেই বিজয় তুলে দিলেন আল্লাহ। আর যখন আয়াতঃ “আমরা আমাদের এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততিকে ডাকি” (৩: ৬১) অবতীর্ণ হলো, তখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসায়ন (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম)-কে ডাকলেন। অতঃপর বললেন হে আল্লাহ! এরাই আমার পরিবার।
[সহীহ মুসলিমঃ ৬০০২] 


২। মুসলিম, পরিচ্ছদঃ ৪. আলী ইবন আবু তালিব (রাঃ) এর ফযীলত
৬০১১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মারওয়ানের বংশের এক ব্যক্তি মদিনার শাসনকর্তা নিযুক্ত হলো, সে সাহলকে ডেকে এনে আলী (রাঃ) কে গালি দিতে বলল। সালব (রাঃ) অস্বীকার করলেন। শাসক ব্যক্তিটি বললো, তুমি যদি গালি নাই দাও তবে অন্তত বল যে, আবূ তুরাবের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত। সা’দ (রাঃ) বললেন, আলী (রাঃ) এর কাছে কোন নামই এর চেয়ে বেশি পছন্দনীয় ছিল না। এ নামে ডাকলে তিনি খুশি হতেন। সে ব্যক্তি বললো, তা হলে আবূ তুরাব নাম হওয়ার ঘটনা বর্ণনা কর।

তিনি বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা (রাঃ) এর ঘরে পদার্পণ করলেন; কিন্তু আলী (রাঃ) কে ঘরে পেলেন না। ফাতিমা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার চাচাত ভাই কোথায়? ফাতিমা (রাঃ) বললেন, তাঁর আর আমার মাঝে একটা (বাক-বিতন্ডা) ঘটেছিল, যার ফলে তিনি রাগ করে চলে গেছেন, আর তিনি আমার কাছে ঘুমোন নি।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বললেন, দেখ তো, আলী কোথায়। লোকটি এসে বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে এলেন। আলী (রাঃ) শুয়েছিলেন। তাঁর এক পাশের চাঁদর সরে গিয়েছিল, ফলে শরীরে মাটি লেগে গিয়েছিলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে মাটি ঝাড়তে শুরু করলেন এবং বললেন, হে আবূ তুরাব, উঠ! হে আবূ তুরাব, উঠ!
------
৩। উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামার ক্ষোভঃ
- عن أبي عبد الله الجدلي قال: دخلت على أم سلمة فقالت لي: أَيُسَبُّ رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم فيكم؟! قلت: معاذ الله أو سبحان الله أو كلمة نحوها ! قالت: سمعت رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم يقول: «مَنْ سَبًّ عَلِيًّا فَقَدْ سَبَّنِي». أخرجه أحمد (6/323 ، رقم 26791) قال الهيثمى (9/130): رجاله رجال الصحيح غير أبى عبد الله الجدلى ، وهو ثقة. وصححه شعيب الأرنأووط في تعليقه على المسند (44/329) والألباني في صحيحته (3332).
অর্থঃ তাবেয়ী আবু আবদুল্লাহ আল-জাদালী বলেন, আমি (মুয়াবিয়ার শাসনামলে) উম্মে সালামার (উম্মুল মুমিনীনের অন্যতম) কাছে গেলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমাদের মাঝে কি আল্লাহর রসূলকে গালি দেওয়া হয়? আমি তখন মাআযাল্লাহ (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই) বা সুবহানাল্লাহ (আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি) অথবা এ রকম অন্য কোনো শব্দ বললাম। তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ صلَّى الله عليه وسلَّم বলেছেন, “যে আলীকে গালি দিল সে আমাকেই গালি দিল।” [ছহীহ সনদে মুসনদে আহমদ (২৬৭৯১)। হাফেজ হাইছামী মজমায়ে (৯/১৩০), শুয়াইব আরনাঊত তাঁর মুসনদে আহমদের তাহকীকে (২৬৭৯১) এমনকি আলবানীও হাদীছটিকে তার সিলসিলা ছহীহাতে (৩৩৩২) ছহীহ বলে মন্তব্য করেছেন]

৪) আরও দেখুন উসমান তাকি এর চোখ ঝাপসা হয়ে যায় এই হাদিস দেখতে!
সুনান আল কাবির, ইমাম নাসাই, খণ্ড ৭ হাদিস নং ৮১৪৮
عن عبدالله بن ظالم قال خطب المغيرة بن شعبة فسب عليا فقال سعيد بن زيد أشهد على رسول الله صلى الله عليه وسلم لسمعته يقول أثبت حراء فإنه ليس عليك إلا نبي أو صديق أو شهيد
“আবু জলম বর্ণনা করেছেন ‘মুগিরা বিন শুবা খুতবা দিল ও আলিকে গালি দিল, সাইদ বিন যাইদ বললেন ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি রাসুল সাঃ বলেছেন……………”।

৫) উসমান তাকি এর চোখ থেকে চশমা খুলে যায় এই হাদিস পড়তে।
أن المغيرة بن شعبة سب علي بن أبي طالب فقام إليه زيد بن أرقم فقال : يا مغيرة ألم تعلم أن رسول الله صلى الله عليه و سلم نهى عن سب الأموات فلم تسب عليا و قد مات
هذا حديث صحيح على شرط مسلم و لم يخرجاه
“মুগিরা বিন শূবা আলীকে গালি দিতে শুরু করল, ফলে যায়েদ বিন আরকম (রাঃ) উঠে দাঁড়াল ও বলল যে ‘তুমি কি জান রসুল আল্লাহ সাঃ মৃতদের গালি দিতে বারন করেছে আর তুমি আলিকে গালি দিচ্ছ যে মারা গিয়েছে”?
মুস্তাদরক আলা সাহিহাইন খণ্ড ১ পাতা ৫৪১ হাদিস নং ১৪১৯, সাহিহ বুখারি ও মুসলিমের মানে।
আল বানী তার ‘সিলসিলাত আহদিস আস সাহিয়া’এর খণ্ড ৫ পাতা ৫২০ তে এটাকে উল্লেখ করে সহীহ বলে সাব্যস্থ করেছেন।

সংগৃহীতঃ আল্লামা আইনুল হুদার বক্তব্য থেকে

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী মানে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত! লেখক- আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিশার আলোকে- আল্লামা মুফতি রেজাউল মোস্তফা কায়সার

প্রিয়নবীর সম্পর্কের চেয়ে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান অপরিহার্য্য অন্য কোন সম্পর্কই নয় -"আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা"

(দলিল) নবী রাসূল আলাইহিস সাল্লাম গন সহ আল্লাহর ওলী গন চিরন্তন জীবিত ।