চোখের দৃষ্টিশক্তি আপনারও আছে; আবার অমানুষেরও আছে। কিন্তু মানবিক দৃষ্টিসম্পন্ন "ব্যক্তি আপনি" আর বস্তুবাদী দৃষ্টিসম্পন্ন "পাশবিক ব্যক্তি" এক নয় -"মারুফ উদ্দীন"

চোখের দৃষ্টিশক্তি আপনারও আছে; আবার অমানুষেরও আছে। কিন্তু মানবিক দৃষ্টিসম্পন্ন "ব্যক্তি আপনি" আর বস্তুবাদী দৃষ্টিসম্পন্ন "পাশবিক ব্যক্তি" এক নয়।

===================================

দৃষ্টিশক্তির কথা বললে সাধারণত আমাদের নিকট চোখের বিষয়টিই প্রথমে মাথায় আসে। তো এই চোখ দিয়ে ধর্ষকও দেখে, আপনিও দেখেন। এখন এই দুই দেখা কি এক? কখনোই নয়।

আবার একইভাবে হাত আপনারও আছে আবার একজন সন্ত্রাসীরও আছে। আপনার কাছে হাতের ব্যবহার যেমন সন্ত্রাসীর কাছে তা একই? নিশ্চয়ই নয়।

এভাবে হাত-পা-চোখ-কান-চিন্তা ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণকারী "আমি সত্তা" আপনার যেমন আছে তেমনি একজন অন্যায়কারীরও আছে। এই দুই "আমি সত্তা" কি একই হল? কোনভাবেই না।

মানুষের মূল দৃষ্টিশক্তি কিন্তু এই "আমি সত্তা" দ্বারাই নির্ধারিত হয়। একজন ধর্ষক যখন দেখে তখন সে তার সত্তার ভিত্তিতেই চোখ দিয়ে দেখে। এখন তার এই "আমি সত্তা" মানুষ সত্তা না হলে সে মানবিক দৃষ্টি দিয়ে কোন কিছু দেখবে না। আপনার "আমি সত্তা" যদি মানুষ সত্তা হয় তবে আপনি অবশ্যই যা কিছু দেখবেন তা মানবিক দৃষ্টি দিয়েই দেখবেন।

মানুষের সত্য মিথ্যা ন্যায় অন্যায় ইত্যাদির প্রতিরুপ বিপরীত রুপ বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষমতাটুকু এই মানবসত্তা মাধ্যমেই হয়ে থাকে। বাইরের যে শারিরীক কাঠামো তা শুধুমাত্র বাহ্যিক বিষয়, মূল বিষয় নয়।

অন্যদিকে মানবসত্তার বিপরীত সত্তা #বস্তুবাদী_সত্তা মানুষের এই আত্মিক দৃষ্টি নষ্ট করে দেয় এবং মানবিক দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তে তাকে বস্তুবাদী দৃষ্টিতে সবকিছুকে ভুলভাবে মুল্যায়ন করতে শেখায়।

বস্তুবাদী সত্তা জীবনের উর্ধে বস্তুকে নিয়ে যায়। যার ফলে বস্তুগত দ্বন্ধ সংঘাত তৈরি করাই বস্তুবাদী সত্তার মূল উপজীব্য বিষয়। যেমনঃ বস্তুবাদী সত্তায় জীবনের উর্ধে বর্ডারকে মহান দৃষ্টিতে দেখানো হয়। জীবনের উর্ধে বর্ডারের স্বার্থে মানুষ খুন করা বস্তুবাদী সত্তার নিকট গৌরবের কাজ!

মানবাত্মা যখন খুন হয় তখন তার পক্ষে সকল নিকৃষ্ট বর্বরোচিত অপকর্ম করা সম্ভব। কেননা, মানবসত্তার বিপরীত বস্তুবাদী সত্তার উদ্ভব যে মানবাত্মাকে খুন করার মধ্য দিয়েই হয় এবং বস্তুবাদী সত্তা দুনিয়ার সবচেয়ে ভয়ংকর দানবীয় সত্তা।

ধর্ষক যখন ধর্ষণ করে, খুনী যখন খুন করে, স্বৈরাচারী যখন রাষ্ট্রকে এক গোষ্ঠীর একক মতবাদের একক ধর্মের করে ফেলে সব মানুষের অধিকার স্বাধীনতা হরণ করে তখন এদের কারো মাঝে মানবসত্তা থাকে না।

এদের প্রত্যেকেই বস্তুবাদী সত্তার দানব হয়ে যায়। এখানে ধর্ষক বস্তুবাদী লিঙ্গবাদী দৃষ্টিতে নিজের হীন নিচ জঘন্য লিপ্সা মেটাতে ধর্ষণ করে। এখানে খুনী বস্তুবাদী দৃষ্টিতে জীবনের উর্ধে বস্তুকে প্রাধান্য দিয়ে খুন করে তার পাশবিক হিংস্র সত্তার আধিপত্য বজায় রাখে।

এখানে সকল অন্যায় অবিচার জুলুম শোষণের মূল প্রজননক্ষেত্র একক গোষ্ঠীর একক জাতীয়তাবাদের একক ধর্মের স্বৈরদস্যুতার অবৈধ রাষ্ট্র জোরজবরদস্তিমূলক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব মানুষের জীবনের আত্মমালিকানা-রাষ্ট্রীয় মালিকানা-স্বাধীনতা- নিরাপত্তা-অধিকার হরণ করে বস্তুবাদী সত্তা বানানোর রাষ্ট্রীয় কারখানা তৈরি করে।

মুক্তির একমাত্র উপায় মানুষ হিসেবে নিজের সত্তাকে বস্তুর উর্ধে জীবনের আলোকে অক্ষুণ্ন রাখার প্রাকৃতিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও সাম্যের বিশ্ব ব্যবস্থা তথা খেলাফতে ইনসানিয়াত।

আল্লামা ইমাম হায়াত প্রবর্তিত বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব সমগ্র মানবমন্ডলীর জন্য জীবনের অক্সিজেন৷ খেলাফতে ইনসানিয়াত তথা বস্তুর উর্ধে জীবনের সার্বভৌমত্ব, জীবনের আত্মমালিকানা, সম্পদ-রাষ্ট্র-দুনিয়ার সম্মিলিত মালিকানা, নিজ নিজ দ্বীন ধর্ম বিশ্বাস আদর্শ মতপথ নিয়ে আশংকামুক্ত স্বাধীনভাবে চলার পথের সূর্যোদয়কে উন্মোচিত করেছেন

আল্লামা ইমাম হায়াত। সূর্যের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যেমন নিজেরই অন্ধত্বকে প্রমাণ করা তদরুপ খেলাফতে ইনসানিয়াত অস্বীকার করার অর্থ হল নিজেকে মানবতার শত্রু হায়ওয়ান হিসেবে নির্লজ্জভাবে প্রমাণ করা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী মানে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত! লেখক- আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিশার আলোকে- আল্লামা মুফতি রেজাউল মোস্তফা কায়সার

প্রিয়নবীর সম্পর্কের চেয়ে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান অপরিহার্য্য অন্য কোন সম্পর্কই নয় -"আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা"

(দলিল) নবী রাসূল আলাইহিস সাল্লাম গন সহ আল্লাহর ওলী গন চিরন্তন জীবিত ।