আপনি ইনসানিয়াত কেন গড়ে তুলবেন? - মারুফ উদ্দীন
আপনি ইনসানিয়াত কেন গড়ে তুলবেন?
==================================
আপনি ইনসান তাই ইনসানিয়াত গড়ে তুলবেন।
সূর্যের বৈশিষ্ট্যই হল আলো দেওয়া। তদরুপ ইনসান তার বৈশিষ্ট্যসুলভ আচরণের বহিঃপ্রকাশ স্বরুপ ইনসানিয়াত গড়বে সেটাই স্বাভাবিক। ইনসান ইনসানিয়াত গড়ে না তুললে এন্টি ইনসানিয়াত ইনসানের জীবনকে বিষাক্ত করে দিবে।
ইনসানিয়াত জীবন সত্যের কথা বলে। আপনি কি জীবনের সত্য নিয়ে বেঁচে থাকতে চান না? জীবনের প্রাথমিক সত্য বলতে জীবন বস্তুর উর্ধে স্রষ্টার নামে হওয়াকে বুঝায়৷ স্রষ্টার নামে হতে হলে স্রষ্টার আলোকে হতে হবে। আমরা ইনসান জীবনের এই পরম সত্য স্বীকার করি বিধায় আমাদেরকে ইনসানিয়াত গড়ে তুলতে হবে৷ জীবনের এই সত্য অস্বীকার করা মূলত নিজেকে ইনসান হিসেবে চিনতেই ব্যর্থ হওয়া।
অন্যদিকে, যদি ইনসানিয়াত কায়েম না থাকে তবে জীবনের এই সত্যকে অস্বীকারকারী মিথ্যার ধারক বাহকরা জীবনকে স্রষ্টাবিরোধী করে ফেলার সব আয়োজন সম্পন্ন করে ফেলবে৷ তখন ইনসান হিসেবে নিজ জীবনের সত্যকে আমরা হারিয়ে ফেলব। তাই নিজ জীবনের সত্য নিয়ে চলার জন্য আমাদেরকে ইনসানিয়াত গড়ে তুলতে হবে।
ইনসানিয়াত জীবনের আত্মমালিকানা ও দুনিয়ার সম্মিলিত মালিকানার পক্ষশক্তি। সমগ্র সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা হলেন মূল মালিক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম এর মধ্য দিয়ে সকল মালিকানা সকল সৃষ্টিকে দান করা হয়। আপনি ইনসান আপনি আপনার জীবনের যেমন মালিক, একইসাথে দুনিয়ায় স্রষ্টাপ্রদত্ত সব প্রাকৃতিক সম্পদেরও অংশীদার। নাস্তিক্যবাদী বস্তুবাদ উদ্ভুত জাতীয়তাবাদের যে অভিশাপ ইনসানের এই সমস্ত মালিকানাকে হরণ করেছে তা পুনরায় ফিরে পাবার জন্য ইনসানিয়াতের বিকল্প কিছু নেই। তাই হারানো মালিকানা ফিরে পেতে আপনি ইনসানিয়াত গড়ে তুলবেন।
ইনসানিয়াত ইনসান হিসেবে প্রতিটি মানুষের প্রত্যেক মানুষের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে চলার স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করার প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। আমাদের দ্বীনি পরিভাষায় "লাকুম দ্বীনি কুম ওয়া লিয়াদ্বীন"। কেউ যেন কাউকে রাষ্ট্র ক্ষমতার জোরে ধর্মরাষ্ট্রের নামে চাপিয়ে দিতে কোন ধর্মকে মানতে বাধ্য করতে না পারে কিংবা একই প্রক্রিয়ায় কোন ধর্মকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে নাস্তিকতাকে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠা করতে না পারে তার জন্য ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে সব মানুষের কল্যাণকর প্রাকৃতিক রাষ্ট্রপন্থা ইনসানিয়াত গড়তেই হবে৷ রাষ্ট্র ধর্ম নির্ধারণ করে দিবে না, ধর্মকে উৎখাতের হাতিয়ারও হবে না। বরং, সব মানুষ তার নিজ নিজ ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে চলার শংকামুক্ত নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এটাই ইনসানিয়াতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
ইনসানিয়াত দুনিয়াব্যাপী সত্যের মুক্ত প্রবাহ ধারা পুনরায় জারি করার একমাত্র আলো। অর্থাৎ, কোনভাবেই সত্যের গতিকে রুদ্ধ করা যাবে না। প্রত্যেকে নিজ নিজ সত্য তুলে ধরবে। জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষ সত্যকে গ্রহণ করে তা নিয়ে নিরাপদে চলার অধিকার রাখে। এই অধিকার মানবাধিকার। সত্যের সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকমের। কারো কাছে ২+২=৫ সত্য, আবার কারো কাছে ২+২=৪ সত্য। এক্ষেত্রে জ্ঞানের মাধ্যমে সত্য উপস্থাপনের এবং তদভিত্তিতে মিথ্যাকে দূর করার জ্ঞানময় পরিবেশ দুনিয়াব্যাপী গড়তে হবে। সত্য বাধাপ্রাপ্ত হলে মিথ্যার একচ্ছত্র অবৈধ আধিপত্য জারি থাকবে যা কিনা সত্যপ্রেমী বিবেকবান মানুষ কখনোই মেনে নিতে পারে না। তাই আপনি ইনসানিয়াত গড়ে তুলবেন।
ইনসানিয়াতের আসলে অসীম বিষয়। দূর থেকে তা দুর্বোধ্য মনে হতে পারে৷ আমরা জমিন থেকে আকাশের তারা দেখলে যেমন তারার পরিধি বুঝতে অক্ষম হই। তদরুপ সরাসরি আলোচনা ব্যতীত ইনসানিয়াতের পরিধি ব্যাপকতা বুঝা কোনক্রমেই সম্ভব নয়।
বস্তুর উর্ধে মানবসত্তার পুনরুজ্জীবিতকারী, বিশ্ব মানবতার প্রকৃত বন্ধু, সর্বপ্রকার মানবতাবিরোধী অপরাজনীতির গ্রাস থেকে সমগ্র জীবন জগত মুক্তির দিশা দানকারী #আল্লামা_ইমাম_হায়াত প্রবর্তিত #বিশ্ব_ইনসানিয়াত_বিপ্লব খেলাফতে ইনসানিয়াতের দিশা প্রতিষ্ঠান। সঠিক এই দিশা ব্যতীত জীবনের মুক্তি অসম্ভব। তাই সকলকে আল্লামা ইমাম হায়াত এর আওয়াজকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks For You Comment