-"আল্লামা ইমাম হায়াত" বলেন - আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত হকের চিরন্তন জামায়াত, হুবুহু এ নামে দল সংগঠন কমিটি করা যায় না
আহলে সুন্নাতের দিশা দিকদর্শনের ভিত্তিতে বিভিন্ন নামে দল সংগঠন কমিটি হতে পারে, কিন্তু নিয়ত ভালো হলেও হুবহু এই নামে করা অজ্ঞতা ও মারাত্মক ক্ষতিকর বিকৃতি।
- #আল্লামা_ইমাম_হায়াত
=================================
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ইসলামের চিরন্তন পবিত্র পূর্ণাঙ্গ মূল ধারার একটা নাম, যার ভিত্তি তাওহীদ-রেসালাত-খেলাফাত- ইমামাত বেলায়াতের ধারায় একমাত্র হক আকিদা অর্থাৎ ঈমানী আকিদা, যার বাইরে হক নেই, অস্তিত্বের সবদিকে হক আকিদাকে ভিত্তি করে শরিয়ত মজহাব তরিকত সবক্ষেত্রে আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক এবং মানবিক সবদিকে ভাইবোন সবাইকে নিয়ে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখার নাম আহলে সুন্নাত।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
দয়াময় আল্লাহতাআলার নামে জীবনের উর্ধে তাঁর মাহবুব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেম ও শাণের ভিত্তিতে প্রাণপ্রিয় আহলে বায়েত ও মহামান্য খোলাফায়ে রাশেদীন এবং মহান মকবুল সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু আনহুমের নীতি আদর্শ ওঅনুসৃত ধারায় হকের ইমামবৃন্দ ও আওলিয়া কেরামের অনুসৃত দ্বীনের প্রকৃত ধারা ই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
আহলে সুন্নাত মানে আসল ইসলাম যার বিপরীতে সবই ইসলামের ছদ্মনামে নকল ভূয়া ইসলাম, কিন্তু হুবহু এ নামে দল সংগঠন কমিটি গঠন আহলে সুন্নাত বুঝতে অক্ষমতা।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
ঈমান ও দ্বীনের সকল বিষয়ে ঈমানের কলেমার আকিদা ও চেতনায় যিনি অটল আছেন এবং বিপরীত আকিদা ও বিপরীত মত পথ থেকে পবিত্র আছেন তিনি কোনো দল পার্টি সংগঠন না করলেও হকের চিরন্তন ধারায় আত্মার দিক থেকে একাত্ম থাকলে তিনি একা থাকলেও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত ও যুক্ত আছেন। তাকে নুতন করে আহলে সুন্নাত হতে হবে না, তবে ঈমানী দায়িত্ব পালনের জন্য সব বাতিল থেকে মুক্ত নির্ভেজাল বিশুদ্ধ ও দ্বীন মিল্লাত মানবতার জন্য জরুরী এবং প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমে উৎসর্গীকৃত সত্যিকার কোনো সংগঠন পাওয়া গেলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হকের বিজয় ও বাতিলের উৎখাতের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া জরুরী ।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন, আহলে সুন্নাত দাবি করেও
কোনো একটি প্রশ্নেও হকের চিরন্তন ঈমানী আকিদার খেলাফ হলে বা বিপরীত মত পথ চেতনার অনুসারী হলে তিনি শত দাবি করলেও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত নন এবং হকের ধারক নন। যেমন আল্লাহতাআলার প্রিয়তম হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নূরে জাতে ইলাহী হিসেবে ঈমান না রাখলে বা অস্বীকার করলে কলেমা অস্বীকার হয়ে যাবে এবং ঈমানদার বা সুন্নী দাবী অসার হয়ে যাবে, আরো যেমন হকের দুশমন অভিশপ্ত কাফের এজিদকে কাফের হিসেবে আকিদা না রেখে মুসলিম মনে করা হলে কলেমা-দ্বীন-খেলাফত ও শাহাদাতে কারবালার মর্ম অস্বীকার হয়ে যায়, ফলে আহলে সুন্নাত তথা সুন্নী দাবির ভিত্তি আর থাকে না। কলেমা দ্বীন জীবন ও মানবতার কাঠামো খেলাফতের বিপরীতে গিয়ে কলেমা ও জীবনের বিপরীত কাঠামো মিথ্যা ও জুলুমের কাঠামো মুলুকিয়তের সমর্থক হয়ে আহলে সুন্নাত দাবি বিপরীত দাবি হয়ে যাবে ।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
আহলে সুন্নাতের দিশা দিকদর্শনের ভিত্তিতে বিভিন্ন নামে দল সংগঠন কমিটি হতে পারে, কিন্তু নিয়ত ভালো হলেও হুবহু এই নামে করা মারাত্মক ক্ষতিকর বিকৃতি। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত কোন প্রচলিত দল সংগঠন নয়, এটা আকিদা-ঈমান-দ্বীনের চিরন্তন ধারা, সরাসরি এ মোবারক নামে কোন দল সংগঠন কমিটি করা বিভ্রান্তিকর এবং এর চিরন্তন রূপরেখার সাথে অসংগতিপূর্ণ, কিন্তু এর নীতি-আদর্শ-লক্ষ্যের ভিত্তিতে বিশ্বস্ত ও যথাযোগ্য সংগঠন আন্দোলন ব্যতীত জীবন ও দুনিয়ায় এর প্রবাহ ধারা কায়েম থাকেনা এবং বিপরীত অপশক্তির দখলে সবকিছু চলে যায়।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
আকিদা ও আদর্শিক বিচ্যুতির সাথে ইসলামের নির্দেশিত রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত (authority of life & state & world of humanity) এর ধারণাসহ বিলুপ্ত করে দেয়া হয়েছে, যে খেলাফতে ইনসানিয়াত পবিত্র কলেমার অবিচ্ছেদ্য বিষয় এবং যা ব্যতীত অপশক্তির গ্রাস থেকে মুক্তি এবং সত্য ও মানবতার স্বাধীন সমাজ-রাষ্ট্র-বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার কোন পথ নেই। খেলাফতে ইনসানিয়াত তথা দ্বীনী মূল্যবোধ ভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মুক্ত মানবতার অখন্ড বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না থাকলে সত্য ও জ্ঞানের মুক্ত প্রবাহ যেমন রূদ্ধ ও নিষিদ্ধ হয়ে যায় তেমনি জীবন ও জগতের উপর বাতিল জালিম অপশক্তির স্বৈরদস্যুতা তথা একক গোষ্ঠিবাদী মুলুকিয়ত কায়েম হয়ে যায়। খেলাফত যে কলেমার জীবন চেতনা তাওহীদ রেসালাত ভিত্তিক জীবন চেতনার ভিত্তিতে সুন্নী আকিদার অবিচ্ছেদ্য বিষয় যা সত্য ও মানবতার রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং মুলুকিয়ত যে সুন্নী আকিদা তথা পবিত্র কলেমার জীবন চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীত বিষয় যা মিথ্যা ও জুলুমের রাষ্ট্রীয় কাঠামো, অস্তিত্বের এ মৌলিক বিষয়কেও ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে যেন বাতেল কায়েম থাকে এবং সুন্নীয়ত বিলুপ্ত হয়।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
একদিকে ইসলামের আসল রাজনীতি খেলাফতে ইনসানিয়াত পরিত্যাগ অপর দিকে ইসলামের রাজনীতি বা ইসলামী রাষ্ট্রের নামে বাতিল-খারেজি-সালাফি-শিয়াবাদ-ওহাবিবাদ ইত্যাদি ইসলামের ছদ্মনামে ইসলামের বিপরীত ধ্বংসাত্মক উগ্রবাদী সন্ত্রাসী অপরাজনীতি ইসলামের কাঠামোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং ইসলামের নামে বিপরীত মতাদর্শ কায়েম হচ্ছে। ইসলামের প্রকৃত ধারা আহলে সুন্নাতের আকিদা-আদর্শ যেমন ইসলামের ছদ্মবেশী বাতিল ফেরকা ওহাবি-সালাফি-শিয়াবাদি মতবাদ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন তেমনি আহলে সুন্নাতের রাজনৈতিক দিকও বাতিল ফেরকার অপরাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, ইসলামের নামে রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্র ইসলামের নামে ইসলামকে বিকৃত ও ধ্বংস করার জন্য বাতিল ফেরকার ভয়ংকর চক্রান্ত, অথচ আহলে সুন্নাতের দাবি করেও বাতিল ফেরকার অপরাজনীতির প্রতিধ্বনি করে বাতেলের সহায়তা ও সুন্নীয়তের ক্ষতি করা হচ্ছে।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
আকিদা-আধ্যাত্মিক-রাজনৈতিক সবদিকে ইসলামের প্রকৃতধারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে এবং দিশা-দিকদর্শন বিলুপ্তির মূখে এসে পৌছেছে। পবিত্র কলেমা কারবালার ঈমানী চেতনা হারিয়ে আকিদা-আদর্শ-আধ্যাত্মিক- রাজনৈতিক দিশাহীনতা, অপূর্ণাংগতা, বিকৃতি, বিভক্তিসহ বিভিন্ন কারণে এবং ভুল নেতৃত্বে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে আমরা আহলে সুন্নাত দুনিয়া থেকে পরাজিত উৎখাত হয়ে পড়েছি, প্রাণপ্রিয় কেবলাভূমি ও সারা দুনিয়া আজ সত্য ও মানবতার বিপরীত বাতিল- জালিম-অপশক্তির জবর দখলে গিয়ে মিল্লাত ও মানবতা পরাধীন ও মহাবিপদগ্রস্ত হয়ে অত্যন্ত অসহায়ভাবে সবদিকে চরম ধ্বংসের মধ্যে নিপতিত হয়ে পড়েছে।
আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন,
এভাবে প্রকৃত ইসলাম তথা আহলে সুন্নাতের বিরুদ্ধে একদিকে বাতিল ফেরকা, বস্তুবাদী মতবাদ, ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদের যুদ্ধ ও তাদের অপরাজনীতির স্বৈরদস্যুতার গ্রাস এবং অন্য দিকে সুন্নীয়তের নামে ভিতর থেকে সুন্নীয়তকে অপূর্ণাংগ ও বিকৃত এবং বাতিল জালিম অশক্তির কাছে বিকিয়ে দেয়ার ফলে ঈমান দ্বীনের মূল ধারা আহলে সুন্নাত আজ নির্মূল হওয়ার পথে।
আল্লামা ইমাম হায়াত ১৯৮৪ সালে ঢাকা হাইকোর্ট মাজার শরীফ চত্ত্বরে ঈদে আজম সম্মেলন, ১৯৮৫ সালে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ চত্বরে মিল্লাত ও মানবতার মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা সমাবেশে এবং ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম লালদিঘি ময়দানে শাণে গাওসে পাক ও জামিয়ে আওলিয়া কেরাম সম্মেলনে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের চিরন্তন আকিদা আদর্শের রূপরেখা তুলে ধরে নিজেই এ ঘোষণা দিয়েছেন এবং সারা দুনিয়ায় অসংখ্য আলেম শিক্ষাবিদ সমাবেশে সবসময় তুলে ধরে চলেছেন এবং সবাই বুঝতে সক্ষম হচ্ছেন।
#সংকলণে:
আল্লামা আরেফ সারতাজ, ডঃ আল্লামা অধ্যাপক কাওসার আমীন, আল্লামা রায়হান রাহবার, আল্লামা জাকির আহসান।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks For You Comment