সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী মানে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত! লেখক- আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিশার আলোকে- আল্লামা মুফতি রেজাউল মোস্তফা কায়সার

সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী মানে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত!
***************************************************

اصحابي كالنجوم بايهم اقتديتم اهتدينم
অনুবাদঃ প্রিয়নবী ইরশাদ করেন, আমার সাহাবাগণ উজ্জলতর তারকার মত তাদের মধ্যে থেকে যে কোন একজনকে অনুসরণ করলে তোমরা হেদায়ত পেয়ে যাবে।
(সুনানুদ দারি কুতুনী, মিশকাত শরীফ)
সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে বিশ্বস্ত, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী ঈমানের পথে সর্বদা অটল থাকা এবং সর্ব কুফরির বিরুদ্ধে চির আপোষহীন এক মহা অবস্থানের নাম।
সাহাবায়ে কেরামের বৈশিষ্ট্য-চরিত্র-আদর্শ কেমন হয় সেটা নিচের তিনটি আয়াত শরীফ পেশ করা হলো-
وَاعْلَمُوا أَنَّ فِيكُمْ رَسُولَ اللَّهِ ۚ لَوْ يُطِيعُكُمْ فِي كَثِيرٍ مِّنَ الْأَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ الْإِيمَانَ وَزَيَّنَهُ فِي قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمُ الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ ۚ أُولَٰئِكَ هُمُ الرَّاشِدُونَ
অর্থঃ তোমরা জেনে রাখ তোমাদের মাঝে আল্লাহর রাসুল আছেন। তিনি যদি অনেক বিষয়ে তোমাদের আবদার মেনে নেন তবে তোমরা কষ্ট পাবে। কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তোমাদের অন্তরে ঈমানের মুহাব্বত সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেন পক্ষান্তরে কুফর, পাপাচার, নাফরমানীর (ছোটখাটো ভুল ত্রুটি) প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তারাই সৎপথ অবলম্বণকারী।
(সূরা হুজুরাত, আয়াত শরীফ- ০৭)
وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ
অর্থঃ যারা প্রিয়নবীর সঙ্গী (সাহাবী) তারা কুফরের বিরুদ্ধে আপোষহীন এবং তাদের মাঝে (সাহাবীদর) একে অপরের জন্য অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা ফাতাহ, আয়াত নং- ২৯)
وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ رَّضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
অর্থঃ সাহাবীদের মাঝে যারা সর্ব প্রথম হিজরত করেছেন এবং যারা প্রথম দিকের আনসারী সাহাবী এবং যারা তাদেরকে আনুগত্যের সাথে অনুসরণ করেছেন আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহ তায়ালার উপর সন্তুষ্ট এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করা আছে এমন জান্নাত যার তলদেশে ঝর্ণা প্রবাহমান সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে আর এটাই হলো সর্বোচ্চ সফলতা।
(সূরা তাওবা, আয়াত নং- ১০০)
উপরের তিনটি কুরআন শরীফের আয়াত দ্বারা স্পষ্ট হলো সাহাবায়ে কেরামদের বৈশিষ্ট্য ও চরিত্র কেমন হয় সেটা!
সাহাবী মানে অনুসরণীয় কিন্তু সাহাবী নামের সাথে সামঞ্জস্য নয় তথা সাহাবী আদর্শের সাথে মিলেনা এমন কর্মকান্ড কখনো অনুসরণীয় অনুকরণীয় গ্রহনীয় নয়!
আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিস মোবারকে আসছে-
একজন সাহাবী তিনি কেবল বে-খেয়ালে কাবা শরীফের দিকে থুথু ফেলেছেন যা প্রিয়নবী দেখেছেন সাথে সাথে সকল সাহাবায়ে কেরামদের বলেছেন, তোমরা কেউ ইনার পেছনে নামায পড়িওনা তথা ইনার পেছনে ইকতিদা করে নামায পড়লে তা কবুল হবেনা অথচ ঐ সাহাবী ইচ্ছাকৃতভাবে থুথু ফেলেনি তারপরও প্রিয়নবী উম্মতদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য, আল্লাহর নিদর্শনের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা এবং সাহাবায়ে কেরামদের আরো
সতর্ক হওয়ার জন্য প্রিয়নবী এই নিষেধাজ্ঞা জারী করলেন।
এই হাদিস শরীফ থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন যে সাহাবী যেহেতু অনুসরণীয় অনুকরণীয় একটি চরিত্র
তাই এই নাম ব্যবহার করে যদি কেউ এর বিপরীত থাকে
সেখান থেকে সাবধান হওয়াও উম্মতের জন্য অপরিহার্য!
মক্কা বিজয়ের সময় অনেকে সুদিন ভেবে বিকল্প পথ না পেয়ে ইসলামে প্রবেশ করেছেন তাই তাদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআন শরীফে বলা হয়েছে তাদেরকে মুমিন বলিয়েন না কেবল আত্মসমর্পনকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। যেমন-
۞ قَالَتِ الْأَعْرَابُ آمَنَّا ۖ قُل لَّمْ تُؤْمِنُوا وَلَٰكِن قُولُوا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيمَانُ فِي قُلُوبِكُمْ ۖ وَإِن تُطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَا يَلِتْكُم مِّنْ أَعْمَالِكُمْ شَيْئًا ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অর্থঃ মরুবাসীরা বলে আমরা ঈমান এনেছি! আপনি বলুন তোমরা ঈমান আনোনি, তবে তোমরা বলো যে, আমরা আত্মসমর্পণ করেছি এখনো তোমাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করেনি তবে যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসুলের আনুগত্য কর তবে তোমাদের কোন আমল বিন্দুমাত্রও নিষ্ফল যাবেনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা হুজুরাত, আয়াত নং-১৪)
সুদিনের বন্ধু আর দূর্দিনের বন্ধু এক নয় যারা মক্কা বিজয়ের সময় ইসলাম গ্রহন করেছেন তারা সুদিনের বন্ধু আর যারা মক্কা বিজয়ের পূর্বে অতুলনীয় ত্যাগ স্বীকার করে দ্বীনের বিজয় সু-নিশ্চিত করেছেন এবং দ্বীনের জন্য সবকিছু উৎসর্গ করে দিয়েছেন তাদের তুলনা সৃষ্টি জগতের কারো সাথে হয়না। হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের সঙ্গী ছিলো মাত্র ৪০ জন আবার যখন বিপদ আসলো তখন হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের সঙ্গ ছেড়ে দিছেন ২৮ জন বাকি ছিলো ১২ জন যাদেরকে পবিত্র কুরআন শরীফের ভাষায় "ইসনা আশারা নকিবা" অর্থ ১২ জন নকিব বলে মহান আল্লাহ আখ্যায়িত করেছেন কিন্তু প্রিয়নবীর সাথে শুরু থেকে ঈমানের সহিত শতভাগ উৎসর্গ হয়ে যারা ছিলেন তারা শত বিপদ শত বাঁধা শত যুদ্ধের মুখে থেকেও প্রিয়নবীর প্রেমের সঙ্গ ছাড়েননি। তাই মক্কা বিজয়ের আগের সাহাবায়ে কেরামদের মহান আল্লাহ আ'জামা দারাজাত দান করেছেন তাদের তুলনা পরবর্তী কারো সাথে হবেনা তাদেরকেই জলিলুল কদর সাহাবী বলা হয় মক্কা বিজয়ের পর কাউকে জলিলুল কদর সাহাবী বলা কুফর। হ্যাঁ যারা পরবর্তীতে ঈমানের উপর অটল ছিলেন তারা সাহাবী বাট জলিলুল কদর নয়। তাদেরকে জলিলুল কদর না বলতে এবং মক্কা বিজয়ের পূর্বের সাহাবায়ে কেরামদের সাথে তুলনা না করতে পবিত্র কুরআন শরীফে নিষেধ করেছেন যেমন-
ۚلَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ
الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا ۚ وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
অর্থঃ তোমাদের মধ্যে যারা মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যায় করেছেন এবং জিহাদ করেছেন তারা সমান নয়, এরুপ সাহাবীদের মর্যাদা অনেক বেশি (জলিলুল কদর) তাদের অপেক্ষা যারা মক্কা বিজয়ের পর ব্যায় করেছেন এবং জিহাদ করেছেন। তবে আল্লাহ তায়ালা উভয়কেই কল্যাণের ওয়াদা দিয়েছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত। (সূরা হাদিদ, আয়াত নং- ১০)
ইতিহাস দেখলে স্পষ্ট হবে যে, মক্কা বিজয়ের সময় যারা ইসলাম গ্রহন করেছিলেন তাদের অনেকেই প্রিয়নবী পর্দা করার সাথে সাথে ইসলামের অন্যতম বিধান যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানাতে লাগলো এবং যাকাতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে লাগলো তখন হযরত সাইয়্যিদিনা
সিদ্দিকে আকবর রাদিআল্লাহু আনহু তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন এবং তাদের চক্রান্তকে ধ্বংস করে দিলেন।
ওহী লেখক টোটাল ২৩ জন ছিলেন তার মধ্যে একজন প্রকাশ্যে মুরতাদ হয়ে গেছে এবং আরেকজন পরবর্তীকালে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন দুজনের মধ্যে যে মুরতাদ হয়েছে তার ব্যাপারে প্রিয়নবী বলেছেন, তাকে কবরের মাটি গ্রহন করবেনা ঠিকই সে মারা যাওয়ার পর কবরের মাটি তাকে গ্রহন করেনি বার বার কবর থেকে উঠে যাচ্ছিলো। প্রশিদ্ধ অহী লেখক হওয়া সত্তেও পরবর্তীতে দ্বীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য কারণে তাকে মুমিন বলে সার্টিফাই করা কোন সুযোগ নাই।
এভাবে অনেকেই দ্বীনের মূল কাঠামোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে যা হাদিস শরীফ ও ইসলামের সঠিক ইতিহাসের মাধ্যমে প্রমাণিত। কাফের এজিদের বাপ তাদের মধ্যে প্রধান
অনেকে অনেকভাবে বলেছেন কিন্তু ইমাম বায়হাকী বলেন, কাফের এজিদের বাপ ইসলাম থেকে খারিজ হয়নি কেননা তিনিতো ইসলামেই প্রবেশ করেননি প্রবেশ করলেইতো খারিজ হওয়ার বিষয় আসে।
এবার আসা যাক সাহাবী নাম চিন্তাই করে কাফের এজিদের বাপের অবস্থান কেমন ছিলো-
১. হযরত বেলাল রাদিআল্লাহু আনহু কাফের মুশিরকদের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে ছোট জিহ্বায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি যখন আজান দিতেন তখন একটু থেমে থেমে দিতেন যা মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয়নবী ও সাহাবায়ে কেরামদের মাঝে পছন্দের হলেও কাফের এজিদের বাপের কাছে অপছন্দের ছিলো নাউজুবিল্লাহ! তিনি প্রিয়নবীকে বললেন আমাদের মাঝে এতজন থাকতে হযরত বেলাল রাদিআল্লাহু আনহুকে দিয়ে আজান দেওয়ার কি দরকার তখন প্রিয়নবী বললেন ঠিক আছে তুমি আজান দাও। কাফের এজিদের বাপ আজান দিছেন কিন্তু ফজর হচ্ছেনা তথা আজান কবুল হয়নি হযরত বেলাল রাদিআল্লাহু আনহু আজান না দেওয়াতে মহান আল্লাহ ফজরকেই অফ করে রাখলেন ফজর প্রকাশ করেন নি সাথে সাথে ক্ষমা চেয়ে হযরত বেলাল রাদিআল্লাহু আনহুকে দিয়ে যখন আজান দিলেন তখন সে আজান কবুল হলো এবং ফজরও হয়ে গেলো।
২.
** وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّه
অর্থঃ আল্লাহর রাসুলকে কষ্ট দেওয়া তোমাদের জন্য উচিত নয়। (সূরা আল-আহযাব, আয়াত নং- ৫৩)
حدثنا : ‏ ‏محمد بن المثنى العنزي ‏ ‏ح ‏ ‏، وحدثنا : ‏ ‏إبن بشار ‏ ‏واللفظ ‏ ‏لإبن* المثنى ‏ ‏قالا ، حدثنا : ‏ ‏أمية بن خالد ‏ ، حدثنا : ‏ ‏شعبة ‏ ‏، عن ‏ ‏أبي حمزة القصاب ‏ ‏، عن ‏ ‏إبن عباس ، قال : ‏ كنت ألعب مع الصبيان فجاء رسول الله ‏ صلي الله عليه و سلم ‏ ‏فتواريت خلف باب قال : فجاء ‏ ‏فحطأني ‏ ‏حطأة وقال : ‏‏ أذهب وإدع لي ‏ ‏معاوية ‏ ‏قال : فجئت فقلت : هو يأكل قال : ثم قال : ‏ ‏لي أذهب فإدع لي ‏ ‏معاوية ‏ ‏قال : فجئت فقلت : هو يأكل فقال : لا أشبع الله بطنه ‏قال : ‏ ‏إبن المثنى ‏ ‏قلت ‏ ‏لأمية ‏ :‏ما حطأني قال : ‏قفدني ‏ ‏قفدة ‏ ‏، حدثني : ‏ ‏إسحق بن منصور ‏ ، أخبرنا : ‏ ‏النضر بن شميل ‏ ، حدثنا : ‏ ‏شعبة ‏ ، أخبرنا : ‏ ‏أبو حمزة ‏ ‏سمعت ‏ ‏إبن عباس ‏ ‏يقولا ‏: ‏كنت ألعب مع الصبيان فجاء رسول الله ‏صلي الله عليه و سلم ‏ ‏فإختبأت منه فذكر ‏ ‏بمثله. ‏
হাদিস শরীফের সারকথাঃ মুসলিম শরীফের বাবুল লা'নতে এই হাদিস শরীফটি বর্ণানা আছে- হযরত ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুমা থেকে হাদিস শরীফটি বর্ণিত তিনি বলেন আমি বাচ্চাদের নিয়ে খেলছিলাম প্রিয়নবী এসে আমাকে বললেন তুমি গিয়ে মুয়াবিয়াকে ডেকে আনো তখন আমি ডাকতে গেলাম এবং বললাম প্রিয়নবী আপনাকে ডাকছেন তখন তিনি জবাব দিলেন- আমি খাচ্ছি এখন যেতে পারবোনা। প্রিয়নবীকে এটা বলাতে আবারো আমাকে পাঠালেন তখনও তিনি বললেন আমি খাচ্ছি এখন যেতে পারবোনা অবশেষে প্রিয়নবী তাকে অভিশাপ দিয়ে বললেন "আল্লাহ তার পেট কখনো ভরাবেন না"।
মুসলিম শরীফের এই হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে কাফের এজিদের বাপ প্রিয়নবীর সাথে চরম বিয়াদবী করেছেন যেখানে নামাযরত অবস্থায় থাকলেও প্রিয়নবী ডাকলে নামায ভেঙ্গে জবাব দিতে হবে কেননা নামাযের মূল প্রিয়নবী। প্রিয়নবীর স্বরণ ছাড়া যদি নামায ই না হয় সেখানে প্রিয়নবী সরাসরি ডাকলে কেমন হুকুম হবে?
নামাযের মধ্যেও প্রিয়নবীর হুকুম চলে যেমন ক্বেবলা পরিবর্তন নামাযের মধ্যে হয়েছে বাহিরে নয় এবং সিদ্দিকে আকবর রাদিআল্লাহু আনহু প্রিয়নবীকে নামাযেই জায়নামাজ ছেড়ে দিয়েছেন নামাযের বাহিরে নয়।
সিহাহ সিত্তার অন্যতম কিতাব নাসায়ী শরীফের মুকাদ্দামায় আসছে- দামেস্কের একটি মসজিদে নামাযরত অবস্থায় ইমাম নাসায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে উমাইয়ার অনুসারীরা জিজ্ঞেস করলো যে, আপনি মুয়াবিয়া সম্পর্কে কিছু বলুন, উনার শানে কিছু থাকলে সেটা আমাদেরকে জানান তখন ইমাম নাসায়ী বললেন, আমার কাছেতো তার সম্পর্কে কোন হাদিস শরীফ জানা নাই তবে একটা আছে সেটা হলো-
لا أشبع الله بطنه
আল্লাহ তার পেট কখনো ভরাবেনা তথা প্রিয়নবীর পক্ষ থেকে তাকে অভিশাপ দেওয়ার এই হাদিস শরীফটি আছে তখন সাথে সাথে উমাইয়ার অনুসারীরা ইমাম নাসায়ী রহঃ কে পাথর নিক্ষেপ করেছেন এবং তাদের পা দিয়ে লাথি মেরে মেরে রক্তাক্ত করে দিলেন। তিনি এত বেশি রক্তাক্ত হলেন যে তাঁর খাদেমকে বললেন, আমাকে মক্কা শরীফে নিয়ে চলো তখন তাঁকে মক্কা শরীফে নিয়ে যাওয়া হলো পরিশেষে তিনি শহীদ হয়ে গেলেন তাঁকে পবিত্র সাফা মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে দাফন করা হয়।
মুয়াবিয়ার শানে প্রিয়নবীর বর্ণিত অভিশাপের সেই হাদিস খানা যেটা মুসলিম শরীফের বাবুল লা'নতে আসছে সেটা বলতে গিয়ে ইমাম নাসায়ী রহঃ কে শহীদ হতে হলো।
৩.
عن أَبِي سَعِيدٍ الخدري ، قَالَ: " كُنَّا نَحْمِلُ لَبِنَةً لَبِنَةً وَعَمَّارٌ لَبِنَتَيْنِ لَبِنَتَيْنِ ، فَرَآهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَنْفُضُ التُّرَابَ عَنْهُ ، وَيَقُولُ: وَيْحَ عَمَّارٍ ، تَقْتُلُهُ الفِئَةُ البَاغِيَةُ، يَدْعُوهُمْ إِلَى الجَنَّةِ ، وَيَدْعُونَهُ إِلَى النَّارِ قَالَ: يَقُولُ عَمَّارٌ: " أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الفِتَنِ "
হাদিস শরীফের সারকথাঃ হযরত আবু সাঈদ খুদুরী রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- আমরা মসজিদ বানানোর জন্য একটি একটি করে পাথর বহন করছিলাম আর হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রাদিআল্লাহু আনহু দুটি দুটি করে পাথর বহন করছিলেন প্রিয়নবী দৃশ্যটি দেখে তার শরীর থেকে ধুলা-বালি ঝেড়ে দিলেন এবং বলতে লাগলেন- আম্মারের জন্য আফসোস!! তাঁকে একটি বিদ্রোহী গ্রুপ শহীদ করবে, আম্মার তাদেরকে জান্নাতের দিকে ডাকবে আর তারা আম্মারকে জাহান্নামের দিতে ডাকবে এটা শুনে আম্মার রাদিআল্লাহু আনহু বললেন- হে আল্লাহ আমাকে সেই কঠিন ফেতনা থেকে রক্ষা করুন।
(১. বুখারী, ৮খন্ড, পৃষ্ঠা-১৮৫-১৮৬ । ২. তিরমিজি, ৫ খন্ড, পৃ. ৬৬৯ । ৩. মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল, ২খন্ড,
পৃ. ১৬১,১৬৪,২৬৪; ৩খন্ড, পৃ. ৫,২২,২৮; ৪খন্ড, পৃ. ১৯৭,১৯৯; ৫খন্ড, পৃ. ২১৫,৩০৬; ৬খন্ড, পৃ. ২৮৯,৩০০)
প্রায় ২৫ জন রাবী থেকে বর্ণিত হাদিস শরীফটি নিঃসন্দেহে মুতাওয়াতির হাদিস যার ব্যাপারে সন্দেহ রাখলেও ঈমান থাকবেনা এই হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, সেই বিদ্রোহী গ্রুপ কোনটা কে সেই বিদ্রোহী গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন? আর কেহ নয় তিনি হলেন কাফের এজিদের বাপ। হযরত আম্মার রাদিআল্লাহু আনহুকে হত্যাকারী নিশ্চিত জাহান্নামী!
খোলাফায়ে রাশেদীনের বিরোধীতা হক্বের ধারক মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর বিরোধীতা করা কখনো বৈধ হতে পারেনা আর এটাকে ইজতিহাদী ভূল বলে হত্যাকারীকে বাঁচানোর কোন সুযোগ নাই কেননা ইজতিহাদ ঈমান নিয়ে নয় শরীয়তের মাসয়ালা নিয়ে হয় অতএব আমি খেলাফতের পক্ষে থাকবো নাকি বিপক্ষে থাকবো সেটা ঈমানের বিষয় অর্থাৎ আমাকে খেলাফত তথা খোলাফায়ে রাশেদীনের পক্ষে থাকতে হবে কেননা উনাদের পক্ষে থাকা ই ইসলামের পক্ষে থাকা উনাদের হুকুম উনাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার ব্যাপারে প্রিয়নবীর নির্দেশনা আছে যথা-
عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ
অর্থঃ তোমাদের উপর আমার নির্দেশিত সুন্নাত এবং খোলাফায়ে রাশেদীনদের সুন্নাত (সিদ্ধান্ত) মেনে নেওয়া আবশ্যক। (তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
এই হাদিস শরীফে থেকে স্পষ্ট হয়ে গেলো- খোলাফায়ে রাশেদীনদের অনুসরণ কেবল আমাদের উপর নয় বরং সকল মাকবুল সাহাবায়ে কেরামদের উপরও ছিলো এবং কিয়ামত পর্যন্ত তাদের অনুসরণ করাই ঈমান তাদের বিপক্ষে যাওয়া মানে প্রিয়নবীর বিপক্ষে যাওয়া আর প্রিয়নবীর বিরুদ্ধে যাওয়া সরাসরি আল্লাহর বিরুদ্ধে যাওয়া।
মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু সহ খোলাফায়ে রাশেদীন উনারা ই সর্বোচ্চ উলিল আমর তথা উম্মতের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত প্রণয়নকারী যাদের আনুগত্য করার হুকুম আসছে সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফে যেমন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ
অর্থঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ ও তাঁর হাবীব এবং তোমাদের মধ্যে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী তাদের আনুগত্য স্বীকার করো।
(সূরা আন-নিসা, আয়াত নং-৫৯)
যেহেতু মাওলায়ে আলা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু খোলাফায়ে রাশেদীনের একজন শুধু তা নয় তিনি বাবুল ইলম অর্থাৎ উনার জ্ঞান উনার সিদ্ধান্ত উনার অবস্থান সবকিছু মদিনাতুল ইলম প্রিয়নবী থেকে সরাসরি আসা সুতরাং কেউ যদি উনার সিদ্ধান্ত উনার জ্ঞানের বিপরীতে অবস্থান নেই তখন তাকে মুমিন বলার কোন সুযোগ নাই কেননা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু মুমিনের অবিভাবক, মুমিন ছাড়া কেউ তাঁর আপন হবেনা আর মুনাফিক ছাড়া তার কেউ শত্রু হবেনা।
হাদিস শরীফে মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু সম্পর্কে অনেকভাবে আলোচনা আসছে যথা- مَنْ كُنْت مَوْلَاهُ فِعْلِيٌّ مَوْلاه
অর্থঃ আমি যার মাওলা আলীও তার মাওলা।
(তিরমিযী শরীফ-৩৭১৩, ইবনে মাজাহ- ১২১ হাদিস নং)
*‏أنا دار الحكمة ‏ ‏وعلي ‏ ‏بابها
অর্থঃ প্রিয়নবী এরশাদ করেন- আমি হেকমত তথা বিজ্ঞানের ঘর আর আলী তার দরজা।
(তিরমিযী শরীফ- কিতাবুল মানাকিব, হাঃনং- ৩৭২৩)
*انا مدينة العلم وعلي بابها
অর্থঃ আমি জ্ঞানের শহর আর আলী তার দরজা।
(তিরমিযী শরীফ, তাবারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
لا يحبك إلا مؤمن ولا يبغضك إلا منافق
অর্থঃ মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর শানে প্রিয়নবী এরশাদ করেন,মুমিন ছাড়া তোমাকে কেউ ভালবাসবেনা আর মুনাফিক ছাড়া তোমাকে কেউ ঘৃণা করবেনা।
এ হাদিস শরীফগুলোর মাধ্যমে মুমিনের অবস্থান স্পষ্ট করার দরকার কেননা একসাথে দুটি হক্ব হতে পারেনা আর মুমিন-মুনাফিক এক বিষয় নয় বরং বিপরীত সুতরাং যে বা যারা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেছে সে বা তারা কখনো হক্ব হতে পারেনা! সিফফিনের যুদ্ধে মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর বিপক্ষে যারা লড়েছে তারা অবশ্যই মিথ্যা ও মুনাফিকি দলে সুতরাং তাদের হক্ব বলা মানে বিপরীত তথা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুকে না হক্ব বলা যেমন কাফের
এজিদ হক বলা মানে ইমামে আকবর ইমাম হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহুকে না হক বলা নাউজুবিল্লাহ!
৪.
ইমামে আকবর ইমাম হাসান রাদিআল্লাহু আনহুর সাথে বিরোধীতা করা এবং উনাকে চুক্তি করাতে বাধ্য করা উনার কদম মোবারকে তীর নিক্ষেপ করে রক্তাক্ত করা উনার সাথে চুক্তি করে ভঙ্গ করা উনাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করার মত ঘটনা ঘটিয়েছে কাফের এজিদের বাপ শুধু তা নয় ইমামে আকবর ইমামে হাসান রাদিআল্লাহু আনহুর হত্যাকান্ডে আনন্দ প্রকাশ করেছে কাফের এজিদের বাপ যা মুফতি আমিমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বারাকাতী তার রচিত তারিখুল ইসলাম বইয়ে রেফারেন্স সহ তুলে ধরেছেন।
৫.
الخلافة في أمتي ثلاثون سنة ثم ملك بعد ذلك
অর্থঃ আমার উম্মতের মাঝে ৩০ বছরের খেলাফত থাকবে এর পরবর্তীতে মুলুকিয়ত ক্বায়েম হবে।
( তিরমিযী, মুসনদে আহমদ, আবু দাউদ শরীফ)
এই হাদিস শরীফ দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে ৩০ বছরের খেলাফত প্রতিষ্ঠিত ছিলো যা প্রিয়নবীর পক্ষ থেকে সমর্থিত কিন্তু এর পরবর্তীতে যা ঘটেছে সেটা গ্রহনযোগ্য নয়। সিদ্দিকে আকবর, ফারুকে আজম, উসমান গণি যুন নুরাইন, মাওলা আলী, ইমামে আকবর ইমাম হাসান, ইমামে আকবর ইমাম হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহুম ইনারা সবাই খোলাফায়ে রাশেদীন।
ইনাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ মানে সত্যের বিরুদ্ধে কলেমার বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করা নাউজুবিল্লা! আর সেটা করে দেখিয়েছে কাফের এজিদের বাপ।
উল্লেখ্য যে খেলাফত যেহেতু ৩০ বছর সেহেতু কাফের এজিদের বাপকে যারা খলিফা বলেন তারা হাদিস শরীফের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন শুধু তা নয় আমরা দেখি ইতিহাসের বইগুলোতে উমাইয়া ও আব্বাসী খেলাফত বলে কিন্তু না সেটা কখনো খেলাফত নয় বরং মুলুকিয়ত যা উপরের হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত তাই বলতে হবে উমাইয়া মুলুকিয়ত ও আব্বাসী মুলুকিয়ত।
এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, উপরোক্ত
৩০ বছরের খেলাফতের হাদিস শরীফ দ্বারা অনেকেই বলে থাকেন যে খেলাফত কেবল ৩০ বছরের আর আসবেনা এটাও চরম মূর্খতা অজ্ঞতা! এখানে প্রিয় নবী যাস্ট উম্মতকে সতর্ক করেছেন যে মুলুকিয়তকে তোমরা খেলাফত হিসেবে সাব্যস্ত করিওনা কেননা খেলাফত মুলুকিয়ত সম্পন্ন বিপরীত একটা বৈধ আরেকটা অবৈধ
তবে খেলাফতের ধারা তোমরা সর্বদা জারি রাখো কেননা এটা সর্বজনীন কল্যাণ ও মুক্তির ধারা সে জন্য ই কারবালার প্রান্তরে ইমাম আকবর রাদিআল্লাহু আনহু খেলাফতের পক্ষে সংগ্রাম করে নিজেকে পরিপূর্ণ উৎসর্গ করেছেন সমগ্র মানবমন্ডলীর জন্য এবং মুলুকিয়তকে চিরতরে উৎখাত করার শিক্ষা দিয়েছেন যাতে আমরা জান কুরবান করে হলেও মুলুকিয়তের বিপক্ষে খেলাফতের পক্ষে থাকি তথা মুলুকিয়তকে কোন ভাবেই আত্মা ও জিন্দেগীতে কবুল করা যাবেনা এভাবে অনেকেই খেলাফতের ধারা রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন এক্ষেত্রে হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রাদিআল্লাহু আনহু অন্যতম যার অবদানে দ্বীনের মূল কাঠামো কিছুটা হলেও রক্ষা পেয়েছে আলহামদুলিল্লাহ
ওয়া রাসুলিহিল কারিম।
এখন প্রশ্ন হলো যদি কেউ বলে ৩০ বছরের পর আর কখনো খেলাফত আসবেনা অতটুকুতেই শেষ কেউ চেষ্টা করলেও বিফলে যাবে কেউ চেষ্টা করা মানে হাদিস শরীফ অস্বীকার করা নাউযুবিল্লাহ! তাহলে হযরত ওমর বিন আব্দুল আজিজ রাদিআল্লাহু আনহুর খেলাফত কি অস্বীকার করবেন? এই খেলাফততো ৩০ বছরের ভিতরে নয় বরং বাহিরে সুতরাং এটির ব্যাপারে কি বলবেন?
অনেকেই ৩০ বছরের পর যেহেতু মুলুকিয়ত আসবে তাই মুলুকিয়তকে বৈধ বলে ফতোয়া দিয়েছে ওদের যুক্তি হলো প্রিয়নবী মুলুকিয়তের পক্ষে বলেছেন নাউজুবিল্লা!
মুলুকিয়ত বলতে সহজভাবে যেটা বুঝায় সেটা হলো স্বৈরতন্ত্র কিন্তু এটা আরো গভীরে। মুলুকিয়ত মূলত কলেমার বিপরীত স্ট্রাকচার যা কুফরী কুফরী কুফরী যেমনটা কায়েম করেছিলো ফেরআউন নমরুদ আবু জেহেল ইত্যাদি শয়তানী তাগুতী শক্তিগুলো। মুলুকিয়ততো অনেক বড় কুফরী এটাকে বৈধ বলা মানে খেলাফত তথা কলেমাকে অবৈধ বলা কারণ মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে খেলাফতকেই বৈধ বলেছেন মুলুকিয়তকে নয় যেটা অসংখ্য কুরআন শরীফের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত যেমন-
إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً
অর্থঃ স্বরণ করুণ যখন আপনার রব ফেরেশতাদের বলেছেন নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীতে খলিফা নির্ধারণ করবো।
(সূরা আল-বাকারা, আয়াত নং- ৩০)
هُوَ الَّذِي جَعَلَكُمْ خَلَائِفَ فِي الْأَرْضِ ۚ فَمَن كَفَرَ فَعَلَيْهِ كُفْرُهُ
অর্থঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তোমাদেরকে পৃথিবীর খলিফা বানিয়েছেন অতঃপর যারা এই খেলাফত অস্বীকার করবে তার উপর কুফরী বর্তাবে অর্থাৎ যে খেলাফতের বিপক্ষে গেয়ে মুলুকিয়ত গ্রহন করে সে কাফের।
(সূরা ফাতির, আয়াত শরীফ- ৩৯)
সূরা আল-আনআমের ১৬৫ নং আয়াত শরীফেও খেলাফত নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা আছে! সূরা আল-মায়েদার ৪৪/৪৫/৪৬ নং আয়াত শরীফে খেলাফতের বিপক্ষে থাকাকে কুফর/জুলুম/ফিসক বলা হয়েছে। এভাবে হাদিস শরীফেও খেলাফতের ধারা যে হক সে বিষয়ে স্পষ্ট আছে যেমন-
عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ
এই হাদিস শরীফে খেলাফতের প্রতি আনুগত্য এবং খেলাফতের পক্ষে থাকা সাথে সাথে খেলাফত প্রতিষ্ঠার সাধনায় যুক্ত থাকার তাকিদ দেওয়া হয়েছে! খেলাফতের পক্ষে থাকা বলতে প্রিয়নবীর পক্ষে থাকা বুঝায় আর মুলুকিয়তের পক্ষে থাকা বলতে শয়তানের পক্ষে থাকা বুঝায় যা স্পষ্ট প্রমাণিত!
মুলুকিয়ত এতই মারাত্মক একটি বিষয় যা বিশ্বাস করলে নিজের আত্মা ও জীবনের অস্তিস্ত্ব বিলিন হয়ে যায়!
পৃথিবীতে মুলুকিয়ত এতই স্পষ্ট অবৈধ ব্যবস্থাপনা যে মুসলিমতো দূরের কথা একজন মানবিক মানুষও বৈধ বলার সাহস করেনি কিন্তু ছিদ্র সেনার মোল্লারা মুলুকিয়তের পক্ষে বলে সেটার রেকর্ড ভেঙ্গেছে! দুনিয়াতে বর্তমানে চলমান যে বৈধ ধারাটি গনতন্ত্র হিসেবে পরিচিত যার অনেক দিক আমাদের পবিত্র খেলাফত থেকে নেওয়া যার বিপরীত হলো স্বৈরতন্ত্র একক গোষ্ঠির নিয়ন্তণ যেটা পৃথিবীর কোন সভ্য মানুষ মেনে নিতে পারেনা সেই মানুষ যে কোন ধর্মের হোকনা কেন অতএব মিনিমাম গনতন্ত্রে বিশ্বাসী লোকও স্বৈরতন্ত্র একক গোষ্ঠির রাজত্বকে মেনে নিবেনা।
যেখানে স্বৈরতন্ত্রের প্রতি মানুষের এত ঘৃণা আর খেলাফতের ধারার হালকা রিফ্লেকটিভ গনতন্ত্রকে গ্রহন করছে মেনে নিচ্ছে যদিওবা এই গনতন্ত্র মানুষের মুক্তি দিতে সক্ষম হয়নি আর সেখানে মুলুকিয়তকে বৈধ বলা খেলাফতকে অস্বীকার করার মত কুফরী পৃথিবীতে আর কিছু আছে বলে মনে হয়না! কেননা এই বিষয়টি ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত মুমিন দাবী আর মানুষ দাবী দুটোই অসার।
৬.
৪১ হিজরীতে যখন কাফের এজিদের বাপ অবৈধভাবে চক্রান্ত করে ক্ষমতায় আসে তখন সর্ব প্রথম যে কুফরী কাজটি করেছে সেটি হলো জুমার খুৎবায় মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু ও আহলে বাইতের উপর গালিগালাজ প্রচলন নাউজুবিল্লাহ! শুধু তা নয় যাতে গালিগালাজ সবাই শুনতে পাই তাই জুমার খুৎবা নামাযের আগে নিয়ে এসেছে।
মদিনার মসজিদে ইমাম আকবর ইমাম হাসান ইমাম আকবর ইমাম হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহুমা যখন যেতেন তখন উনারা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর উপর গালিগালাজ দেওয়াটা সহ্য করতে পারতেন না তারা কান্না করে করে আবার চলে আসতেন। এভাবে প্রায় ৮০ বছর পর্যন্ত জুমার খুৎবায় আহলে বাইতের উপর গালাগালি করা প্রচলন ছিলো অবশেষে হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রাদিআল্লাহু আনহু ক্ষমতায় এসে বহু বাঁধা উপেক্ষা করে খুৎবায় আহলে বাইতের উপর গালিগালাজের প্রচলন উড্র করে মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর শানে সংযোগ করেন কাররামাল্লাহু তায়ালা ওয়াজহাহু।
ওমর বিন আব্দুল আজিজ রাদিআল্লাহু আনহু উমাইয়া বংশের হলেও উনাকে যদি কেউ উমাইয়া বলতেন তখন ঘৃণার সাথে তাকে বেত্রাঘাত করতেন কেননা উমাইয়া বংশের প্রতি কাফের এজিদের বাপ এবং কাফের এজিদের প্রতি উনার ঘৃণা ছিলো চরম উর্দ্ধে।

ইমাম আকবর ইমাম হাসান রাদিআল্লাহু আনহুর সাথে কাফের এজিদের বাপ চুক্তি করেছিলো যে, আমার পরে আমি ইমাম আকবর ইমাম হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহুকে ক্ষমতা হস্তান্তর করবো অথচ বাস্তবে দেখা গেলো কাফের এজিদের পক্ষে জোর করে অনেকের কাছ থেকে তিনি বাইয়াত নিয়ে নিছে এবং চুক্তি ভঙ্গ করে কাফের এজিদের কালো হাতে অবৈধ ক্ষমতা হস্তান্তর করে দিলো যার ফলে অবৈধভাবে ক্ষমতা পাওয়া কু-সন্তান ক্ষমতার অপব্যবহার করে কিছু গুন্ডা বাহিনী তৈরি করে ইমাম হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহুর পক্ষ থেকে বাইয়াত নেওয়ার চালাকী শুরু করেছে। প্রতারণার পর প্রতারণা করে অবশেষে কারবালার প্রান্তরে সেই কাফের এজিদের শয়তান সৈনিকরা
আহলে বাইতের ১৭ জন সদস্য সহ প্রায় ৭২ জন প্রিয়নবীর
আশেককে নির্মমভাবে শহীদ করেছে যা ইতিহাসে খুবই হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা। ইমামে আকবর রাদিআল্লাহু আনহু চেয়েছেন সত্য-সুবিচার মানবতা অধিকারের ধারা খেলাফতে ইনসানিয়াত টিকে থাকুক আর মিথ্যা-অবিচার-জুলুম-শোষণ চিরতরে ধ্বংস হোক কিন্তু কাফের এজিদ চেয়েছে ঠিক তার বিপরীত যা সে বাস্তবে করে দেখিয়েছে যেটা আবু জেহেলও দেখাতে পারেনি।
৮.
কাফের এজিদের বাপ যদি হযরত ওসমান গণি যুন-নুরাইন রাদিআল্লাহু আনহুর হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর বিপক্ষে দাড়াইছে তাহলে সে যখন অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসছিল ১৮ বছর অবৈধ ক্ষমতা ধরে রেখেছিলো তখন হযরত যুন নুরাইন রাদিআল্লাহু আনহুর হত্যার বিচার করেনি কেন?
ডাল মে কুচ কালা হ্যায়!!! মূলত হযরত উসমান রাদিআল্লাহু আনহুর হত্যার বিচারের নাম দিয়ে মুমিনদের মাঝে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা এবং খেলাফত উৎখাত করে মুলুকিয়ত কায়েম করাই ছিলো মূল উদ্দেশ্য!

★★ এত কুফরী মুনাফিকি অমানবিক ঘটনা ঘটানোর পরও যদি কাফের এজিদ এবং তার বাপের পক্ষে দালালী চামচামী করে তাহলে কষ্টটা কোথায় ঠেকে বলুন?
কাফের এজিদের বাপের পক্ষে খারেজী মার্কা সুন্নীরা যেসব রেফারেন্স দিচ্ছে সেগুলোর জবাব নিচে পেশ করা হলো-
১. অনেকে বলে সিফফিনের যুদ্ধে কাফের এজিদের বাপের ইজতিহাদী ভূল ছিলো সুতরাং এতে কোন অপরাধ নাই!
এর জবাবে আমি বলতে চাই, ইজতিহাদ ঈমান নিয়ে হয়না যেমন আমি খেলাফতের পক্ষে থাকবো নাকি মুলুকিয়তের পক্ষে থাকবো এটা ঈমানের বিষয় আর তা স্পষ্ট, গবেষনার কোন প্রয়োজন নেই তবে গবেষণা তথা ইজতিহাদ হয় শরীয়তের মাসয়ালা নিয়ে। যে বা যারা ইজতিহাদী ভূল বলে
কাফের এজিদের বাপকে বাঁচিয়ে নিতে চাই সে বা তারা
কাফেল এজিদের বাপের পক্ষে, নিশ্চিত হকের বিপক্ষে।

২. অনেকে বলে কাফের এজিদের বাপ কাতেবে ওহী ছিলো তাই উনার শানে কিছু বলা যাবেনা! যারা এমনটা বলে তাদেরকে বলছি শুনুন, মক্কা বিজয়ের পর মাত্র ১৮ মাস ওহী আসছে। ওহী যা আসার সব কিন্তু মক্কা বিজয়ের আগেই চলে আসছে। পরে আসলেও খুব কম! মক্কা বিজয়ের পর কাফের এজিদের বাপ ওহী লেখেছে খুবই
কম। এখানে কম হলেও প্রবলেম হতোনা যদি ওহীর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখতেন। ওহী লিখলেই যে খাটি মুমিন হয়ে যাবে তা কিন্তু ঠিক না যেমন বর্তমানে যারা কুরআন শরীফ লিখেন কম্পিউটারে কম্পোজ করেন সবাইতো মুমিন না অনেক বিধর্মীও আছে তাই বলে কুরআন শরীফ কম্পোজ করার কারণে কি মুমিন হয়ে যাবে?
মূল কথা হলো ওহী লেখা নয় ওহীর উপর বিশ্বাস রাখা এবং ওহীর বিপরীতে না চলাই একজন খাটি মুমিন হওয়ার বৈশিষ্ট্য ও আদর্শ।

হাজ্জাজ বিন ইউসুফ সে কুরআন শরীফে হরকত দিয়েছে
যার হরকত দেওয়া কুরআন শরীফ এখনো পড়া হচ্ছে কেউ অস্বীকার করছেনা কিন্তু হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কি পরবর্তীতে হক্বের উপর ছিলো? না চিলোনা বরং বড় জালেম ছিলো এবং কাফের এজিদের পক্ষে কাজ করেছে!

হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআন শরীফে হরকত দিলেও তাকে মুমিন বলা যাচ্ছেনা কেননা সে ওহীর বিপরীত কাজ করেছে সে কুরআনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে সে জুলুম করেছে অনেক মুমিন হত্যা করেছে! নাউজুবিল্লাহ! নাউজুবিল্লা!

৩. হাদিস শরীফের রেফারেন্স দিয়ে অনেকে বলে যে, ইউরোপ সমুদ্র অভিযানের ১ম অভিযানে যারা অংশগ্রহন করবে তারা সবাই জান্নাতী এখানে নাকি কাফের এজিদের বাপও ছিলো নাউজুবিল্লাহ! অথচ সমুদ্র অভিযান হয়েছিলো টোটাল ৭ বার প্রথম বারে যারা অংশগ্রহন করেছেন সেখানে কাফের এজিদের বাপ ছিলোনা। এরপর দ্বিতীয় অভিযানে হযরত মা আমিনা রাদিআল্লাহু আনহার বোন উম্মে হারম প্রিয়নবী থেকে ঐ অভিযানে অংশগ্রহন করার অনুমতি নিয়েছেন অতঃপর তিনি সেখানে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। এভাবে ৭ম বারে কাফের এজিদের বাপ না পাত্তে অংশগ্রহন করেছে কিন্তু সেই অভিযানে সিপাহসালার ছিলেন অন্য একজন যা হাদিস শরীফ ও ইতিহাসের মাধ্যমে প্রমাণিত।

৪. তিরমিযী শরীফের হাদিসের বরাত দিয়ে অনেকে বলছেন যে, কাফের এজিদের বাপ হাদী মাহদী অথচ
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী, ইমাম ইবনে জাওরী, ইমাম যাহরী, শাহ্ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলবী সহ অসংখ্য ইমাম বলেছেন- কাফের এজিদের বাপের ব্যাপারে প্রশংসামূলক যে হাদিস শরীফগুলো সবগুলই মাউজু তথা জাল।

উমাইয়া মুলুকিয়তের সময়কালিন এবং পরবর্তীতে খারেজীদের মাধ্যমে কাফের এজিদ ও তার পিতাকে নির্দোষ ও সঠিক মুমিন হিসেবে তুলে ধরার জন্য অনেক হাদিস শরীফ জাল এবং ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে।

যেমন মুসান্নেফে আব্দুর রাজ্জাক মূল কিতাবে প্রিয়নবীর নুরের অধ্যায় থাকলেও ভারত থেকে দেওবন্দী খারেজীদের মাধ্যমে যে কিতাব চাপানো হয়েছে সেখানে পুরো অধ্যায় বিলুপ্ত করে দিছে নাউজুবিল্লা! ঠিক এভাবে কাফের এজিদের বাপকে উদ্ধার করার জন্য আমাদের ইমামদের বিশুদ্ধ কিতাবগুলোতেও সংযোজন বিয়োজন করেছে ক্ষমতার জোরে ভয় দেখিয়ে। যেখানে খারেজীরা আয়াত শরীফের বিকৃতি করে ফেলে সেখানে হাদিস শরীফ করা কোন বড় ব্যাপার না। আরেকটি বিষয় জেনে রাখা দরকার যে, মুয়াবিয়া নামক প্রিয়নবীর আরো কয়েকজন সাহাবী ছিলেন যান রাবী পরিচিতি কিতাব দেখলে বুঝবেন।

৫. সুন্নী নামক এক খারেজী বক্তা জুমার নামাজে বক্তব্য দিচ্ছিলো যে, কাফের এজিদের বাপ নাকি যুন-নুরাইন
রাদিআল্লাহু আনহুর হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর বিরোধীতা করেছেন, কাফের এজিদের বাপ নাকি দেখতে পেয়েছে যে মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর দলে উসমান গণি রাদিআল্লাহু আনহুর হত্যাকারীরা ঘুরপাক খাচ্ছে এবং তাদেরকে নাকি মাওলা আলী রাদিআল্লাহু প্রশ্রয় দিচ্ছিলেন তাই কাফের এজিদের বাপ যুদ্ধ করেছে নাউজুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!

এ ধরণের বক্তব্য পেশকারী সরাসরি খারেজী জাহান্নামী শয়তান কাফের এজিদের অনুসারী ছাড়া কিছু নয়।
৬. অনেকে এতটুকৃন দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে যে, কাফের এজিদের ফাদার নাকি আশরায়ে মোবাশশারাহ এর একজন নাউজুবিল্লাহ! অথচ হাদিস শরীফে আশরায়ে মোবাশশারাহ কারা তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যা নিচে পেশ করা হলো-

نص الرسول - صلى الله عليه وسلم - نصاً صريحاً على أن عشرة من أصحابه من أهل الجنة، ففي (مسند أحمد)، و(سنن الترمذي) عن عبدالرحمن بن عوف عن النبي - صلى الله عليه وسلم - قال: ((أبو بكر في الجنة، وعمر في الجنة، وعثمان في الجنة، وعلي في الجنة، وطلحة في الجنة، والزبير في الجنة، وعبد الرحمن بن عوف في الجنة، وسعد بن أبي وقاص في الجنة، وسعيد بن زيد في الجنة، وأبو عبيدة بن الجراح في الجنة)) .وإسناده صحيح
উপরের সহিহ সনদে বর্ণিত হাদিস মোবারকে ১০ জন জান্নাতের শুভ সংবাদপ্রাপ্ত পবিত্র সাহাবীর নাম যথাক্রমে-

১. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত সিদ্দিকে আকবর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু

২. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত ফারুকে আজম
রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু

৩. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত যুন-নুরাইন
রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু

৪. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত মাওলায়ে আ'লা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু

৫. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত তালহা
রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু

৬. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত জোবাইর
রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু

৭. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত আব্বুর রহমান বিন আউফ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু

৮. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত সা'দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু

৯. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত সাঈদ ইবনে যাইদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু

১০. সাইয়্যিদিনা ও সানাদিনা হযরত আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু

তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে মাকবুল সাহাবায়ে কেরাম যারা ঈমানের সাথে প্রিয়নবীকে দেখে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁরা সবাই জান্নাতী এ ব্যাপারে সন্দেহপোষণকারী জাহান্নামী এখানে ১০ জনের নাম মোবারক বিশেষভাবে আনার পেছনে অনেক অনেক কারণ জড়িত কিন্তু এটাকে দলিল করে অন্য মাকবুল সাহাবায়ে কেরামদের শানে বিয়াদবী করা কুফরী!!
আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, ১০ জনের এই বিশেষ
লিস্টে কাফের এজিদের আব্বুকে সংযুক্ত করা মানে সরাসরি পবিত্র হাদিস শরীফের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া এবং প্রিয়নবীর উপর মিথ্যারোপ করা নাউজুবিল্লাহ যা একজন মুমিনের চরিত্র হতে পারেনা যদি কেউ এ ধরণের হাদিস শরীফের উপর মিথ্যা তোহমত দেই বা হাদিস শরীফ সংযোজন বিয়োজন করে সে চির জাহান্নামী যা নিম্নের হাদিস মোবারক দ্বারা সু-স্পষ্ট প্রমাণিত--

"من كذب علي متعمدا فليتبوأ مقعده من النار
(বুখারী ও মুসলিম শরীফ)
ভাবানুবাদ- প্রিয়নবী ইরশাদ করেন, যে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করে তথা হাদিস শরীফের উপর মনগড়া কথা বলে যোজন বিয়োজন করে তার অবস্থান জাহান্নাম তথা সে জাহান্নামের অধিবাসী হওয়ার জন্য এই কাজটিই যথেষ্ট!

৭. অনেকেই কাফের এজিদের ফাদারকে হকের মাপকাঠি হিসেবে দেখেন নাউজুবিল্লাহ! অথচ পবিত্র কুরআন ও হাদিস শরীফের কোথাও উনাকে হকের মাপকাঠি হিসেবে উল্লেখ করেন নি বরং মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুকেই হকের মাপকাঠি হিসেবে তুলে ধরেছেন যা প্রমাণিত!

আহলে বাইত, খোলাফায়ে রাশেদীন, মাকবুল সাহাবায়ে কেরামদের ইজমা, সত্যের ইমামবৃন্দ ও আউলিয়া কেরামদের নিরবিচ্ছিন্ন পূর্ণাঙ্গ পথই হকের পথ যা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোন লোক হক দাবী করলে তা অসার হবে!

বিঃদ্রঃ কাফের এজিদের বাপের বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদিস শরীফ ও সঠিক ইতিহাসের আলোকে বাস্তব বিষয় তুলে ধরা শিয়া আক্বিদা নয় বরং শিয়াবাদ, খারেজী মতবাদ ও মুলুকিয়ত চিনার অন্যতম সহায়ক।

কাফের এজিদ ও তার পিতার কালো অধ্যায় থাকলেও কাফের এজিদের ছেলে হযরত আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি কিন্তু একজন মুমিন তিনি কাফের এজিদের বিরুদ্ধে ছিলেন এবং আহলে বাইত, খোলাফায়ে রাশেদীন এবং মাকবুল সাহাবায়ে কেরামের পক্ষে ছিলেন যার জন্য উনাকে আমরা অনেক সম্মান করি ও ভালবাসি তবে কষ্টের বিষয় হলো কাফের এজিদের গ্যাং এই মুমিন সন্তান এবং উনার শিক্ষককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে নাউজুবিল্লা!!

(লেখক- আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিশার আলোকে-
 আল্লামা মুফতি রেজাউল মোস্তফা কায়সার)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রিয়নবীর সম্পর্কের চেয়ে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান অপরিহার্য্য অন্য কোন সম্পর্কই নয় -"আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা"

(দলিল) নবী রাসূল আলাইহিস সাল্লাম গন সহ আল্লাহর ওলী গন চিরন্তন জীবিত ।