ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের সংঘাত নিয়ে মুফতি আল্লামা রেজাউল কায়সার যা লেখেছেন




হামাসের হামলার পরিণতি ভোগ করছে গাজার সাধারণ মুসলিম জনতা। 

যারা কোনো যুদ্ধ চায়না চাই কেবল শান্তি। কিন্তু যুদ্ধ বিগ্রহ তাদের ছাড়ছেনা। ভিতর এবং বাহিরের শত্রু সবাই যেন মুসলমানদের ধ্বংস করতে এক হয়েছে। গাজার মুসলিমরা এতদিন কেন একটু নিরবে শান্তিতে বসবাস করছিলেন সেটা ইরানের শিয়াবাদ সৃষ্ট হামাসের সহ্য হলোনা। এমনিতে প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনের গাজার মুসলিমদের উপর নির্যাতন চলছে সেখানে আরো কাটা গায়ে লবণ ছিটকে দিল হামাস। কি আজব! ইসরায়েলের মত একটি পরাশক্তি রাষ্ট্র যার সাথে আছে বিশ্বের সব শক্তিশালী রাষ্ট্র সেই রাষ্ট্রে হামলা করে বুঝি বিজয়ী লাভ করা সম্ভব? 
আপনারা কেউ ফেইসবুক থেকে কেউ আবার ইরান থেকে একত্রিত হয়ে হামাসের সাথে যুদ্ধ করছেন কিন্তু আপনাদের কোনো ক্ষতি হবেনা ঘুরেফিরে গাজার মুসিলমদের মরতে হবে। আপনারাতো ভাবছেন তারা মরলে মরুক আমাদের আল- আকসা দখল করতে হবে। আল- আকসা উগ্রবাদ ইহুদীদের জবরদখলে থাকা আর ইহুদী সৃষ্ট শিয়াবাদের দখলে থাকা সেইম। সবই ধর্ম ও মানবতার শত্রু। কেউ ধর্ম ও মানবতার আপন নয়। ধর্ম কেবল তাদের মূখোশ।


হামাস কর্তৃক ইসরায়েলের উপর এই অতর্কিত বর্বর হামলার পূর্বে কি গাজার মুসলমানদের নিরাপত্তা ও আশ্রয়কেন্দ্র নিশ্চিত করেছে? তাহলে তারা কিভাবে মুসলমানদের আপন হল? তারা তো দূর থেকে তাদের ক্ষমতা আর বাহাদূরি দেখিয়ে দূরে বসে আনন্দ উৎযাপন করছে কিন্তু যুদ্ধে বিধ্বস্ত হচ্ছে গাজা ও গাজার সাধারণ মুসলমান বা মানুষ! আপনারা যারা ফেইসবুকে ইসরায়েল ধ্বংস করে দিচ্ছেন আপনারা কি ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জান- মাল নিয়ে একটুও ভেবেছেন? তাদের রক্তাক্ত দেহ দেখার জন্য বুঝি মরিয়া হয়ে আছেন? আরে যে যাই বলুক মসজিদ আল- আকসা পৃথিবীর কোনো অপশক্তি ধ্বংস করতে পারবেনা কেননা সেটার হেফাজত স্বয়ং রাব্বুল আলামিনের নিকট। তবে সেটা উগ্রবাদী ইহুদীদের থেকে উদ্ধার করার পথ পদ্ধতি যুদ্ধ নয় বরং রাজনৈতিক শক্তি ও বিশ্বে জ্ঞান- বিজ্ঞান- প্রযুক্তিগত দিকে মুসলিমদের শক্তিশালী অবস্থানই আল- আকসা উদ্ধারে ভূমিকা রাখতো। উগ্রবাদ ইহুদীরা জোর করে আল- আকসা জবরদখল করে রাখলেও পৃথিবীর কিছু জালেম ছাড়া কেউ সেটা পছন্দ করেনি। কেউ তাদের পক্ষে সমর্থন দেয়নি। তবে এই অতর্কিত হামলার ফলে তাদের ফিলিস্তিন জবরদখল এবং আল- আকসায় কর্তৃত্ব আরো সহজ হয়ে গেলো। মুসলমানদের অকাতরে হত্যা করার পথ তৈরি হল। আর এই পথ বার বার আমরা আবেগী বিবেকহীন এবং বিশ্ব রাজনীতি বিষয়ে অজ্ঞ জাহেলরা করে দিচ্ছি। নির্বিচারে নিরিহ মানুষ হত্যা করা ইসলাম সমর্থন করেনা। সেই মানুষ যেই ধর্মের বা যেই মতবাদের হোক না কেন। 


উগ্রবাদ ইহুদীরা যেমন ধর্ম ও মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ঠিক শিয়াবাদী হামাসও ধর্ম ও মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।  জালেমরা সুযোগ খোঁজে জুলুম করার জন্য আর সেই সুযোগ যদি মাজলুমরা করে দেয় তবে তারাতো আনন্দচিত্তে জুলুম নির্যাতন চালাবে। তাদের জুলুমের পথ এখন পরিস্কার। এখন বিশ্বের কোনো চাপ থাকবেনা। তারা বলবে আমাদের উপর হামলা করেছে তাই আমরাও হামলা করছি। আমাদের দিকে আক্রমণ করেছে তাই আমরাও তাদের আক্রমণের প্রতিহত করছি। হামলা করেছে হামাস আর নেতা নিয়াহু হুমকি দিয়েছে গাজা উড়িয়ে দেয়ার। তাহলেতো স্পষ্ট বুঝা যায় যে তাদের টার্গেট! 

প্রযুক্তির এই যুগে অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করা অমানুষগুলো আসলেই মাতাল! আরে প্রযুক্তির যুদ্ধই বড় যুদ্ধ। একটি অস্ত্রও খরচ করতে হবেনা। আপনি শুধু প্রযুক্তির উন্নতি করে তাদের থেকে আরো শক্তিশালী অস্ত্র প্রস্তুত করে রাখেন এবং জ্ঞান- বিজ্ঞানের উন্নতি সাধন করে অর্থনৈতিকভাবে সফল হয়ে যান তবে দেখবেন পৃথিবীর বড় বড় শক্তিশালী রাষ্ট্র এমনিতেই আপনার দিকে নত হয়ে থাকবে। সাধারণ অস্ত্র খরচ করলেতো অস্ত্র ব্যবসায়ীদের উন্নতি হবে আর সাধারণ জনগণ মারা যাবে যা কারো কাম্য নয়। ইসরায়েলে প্রযুক্তি ও জ্ঞান- বিজ্ঞানের এতই উন্নতি হয়েছে তাদের শতকরা ৯০% মানুষ বিজ্ঞানী! পৃথিবীর বড় বড় যোগাযোগ মাধ্যমে এবং সামাজিক প্রচারমাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের শহরে শুধু প্রযুক্তির চর্চা হয়। তাদের অর্থনীতি অবস্থা এতই শক্তিশালী যে আমেরিকাও তাদের কাছে হার মানবে। আমেরিকাও অনেকাংশে ইসরায়েলী উগ্রবাদ ইহুদী কর্তৃক পরিচালিত।

 সাধারণ মানুষের শান্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব! 
পৃথিবীর উগ্রবাদ ইহুদীবাদ, শিয়াবাদ, সৌদি গোত্রবাদ, তালেবানী মতবাদ, সালাফীবাদ, খারেজীবাদ, জাতীয়তাবাদ, চিরতরে ধ্বংস করার একটা সহজ এবং কার্যকর মেডিসিন তা হল ইনসানিয়াত। মানবসত্তার ভিত্তিতে ইনসান তৈরি করে তাদের মাধ্যমে ইনসানিয়াতের রাজনীতির প্রকাশ ঘটিয়ে ইনসানিয়াত তথা সব মানুষের রাষ্ট্র- বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করলে সব অপশক্তি বিলিন হয়ে যাবে। বিশ্বের সকল মানবিক মানুষ যদি বলে আমরা যুদ্ধ চাইনা শান্তি চাই মানবতা চাই তবে অতিশীঘ্রই মানবতার রাষ্ট্র- বিশ্ব তৈরি হবে। 

যার যার ধর্ম নিয়ে স্বাধীনভাবে চলবে, কেউ কাউকে আঘাত করবেনা খুন করবেনা, কারো ধর্ম বিশ্বাস অন্যের উপর জোর করে রাষ্ট্র ক্ষমতার বলে চাপিয়ে দিবেনা, সত্য- জ্ঞান- ন্যায়ের বাঁধাহীন মুক্তপ্রবাহ থাকবে, রাষ্ট্রীয় ও প্রাকৃতিক সম্পদ সর্বজনীন হবে, মানবিক সাম্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলেই সব মিথ্যা- জুলুম- বর্বরতা ও একক ধর্ম বা জাতী তথা একক গোষ্ঠীর নির্মমতা হিংস্রতা দূর হবে। 
সত্য ও মানবতার বন্ধু আল্লামা ইমাম হায়াতের উপস্থাপিত  স্রষ্টা ও স্রষ্টার আলো জীবনের রাসুল প্রদত্ত প্রাকৃতিক এই সিস্টেম যদি পৃথিবীতে পুনরায় আনা যায় তবে বিশ্বে শান্তি ফিরে আসবে। অন্যথায় ধর্ম ও মানবতার বিপর্যয় হতে থাকবে প্রতিনিয়ত। যেখান থেকে বাঁচার পথ থাকবেনা। 

জীবন স্রষ্টার দান- মানবতা রাসুলের দান।
সব মানুষ ভাই ভাই- মানবতার দুনিয়া চাই।
সব মানুষ এক মানুষ- এক মানুষ সব মানুষ।
নিরাপদ জীবন চাই- মানবতার রাষ্ট্র চাই।
ধর্ম যার যার- রাষ্ট্র সবার দুনিয়া সবার।
ইনসানিয়াতের রাষ্ট্র- সব মানুষের রাষ্ট্র।
ইনসানিয়াত ছাড়া রাষ্ট্র- সব সৃষ্টির অনিষ্ট।
ইনসানিয়াতের রাজনীতি- সব মানুষের বাঁচার নীতি।
ইনসানিয়াতের রাজনীতি- সব মানুষের মুক্তির নীতি।
চাইনা দ্বন্দ্ব সংঘাত- চাই শুধু ইনসানিয়াত।
 (আল্লামা ইমাম হায়াত, প্রতিষ্ঠাতা- বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব- World humanity revolution)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রিয়নবীর সম্পর্কের চেয়ে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান অপরিহার্য্য অন্য কোন সম্পর্কই নয় -"আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা"

সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী মানে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত! লেখক- আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিশার আলোকে- আল্লামা মুফতি রেজাউল মোস্তফা কায়সার

মহামান্য ইমাম ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহ আলাইহির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ।