বর্তমান বিশ্বের রাজনৈতিক কাঠামো মানবতাভিত্তিক নয় মানবতাবিরুদ্ধ।
বর্তমান রাষ্ট্রকাঠামো ও রাষ্ট্রব্যবস্থা মানবতাভিত্তিক নয় মানবতাবিধ্বংসী।
জীবনের স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের স্বাধীনতাও এক বিষয় নয়। জীবনের স্বাধীনতা না থাকলে রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা অসার হয়ে যায়। জীবনের স্বাধীনতা ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতাই রাষ্ট্রের সার্থক স্বাধীনতা।
কেবল দেশ রাষ্ট্র বিভক্ত করতে পারলেই স্বাধীনতা বা বিজয় মনে করা ধ্বংসাত্মক মূর্খতা।
সত্য ও মানবতার স্বাধীনতা ও বিজয় আর মিথ্যার ধারা ও তাদের জুলুম স্বৈরদস্যুতার ধারার স্বাধীনতা ও বিজয় এক নয় বিপরীত বিষয়।
তাই সব কিছুর আগে সত্য ও মানবতার ধারা ও বিপরীত ধারা বুঝতে হবে, সত্য ও মানবতার ভিত্তিতে অন্ততঃ মানুষ হিসেবে নিজের অস্তিত্ব এবং পক্ষ বিপক্ষ বুঝতে হবে, নাহয় মিথ্যার জুলুম স্বৈরদস্যুতার ধোকার শিকার হয়ে যাবে জীবন, বিণাশ হয়ে যাবে অস্তিত্ব।
দুনিয়ার প্রায় রাষ্ট্রে এখন বিজয় স্বাধীনতা ইত্যাদি নামে যে দিবসগুলো পালন হয় তার প্রায় সবটাই জীবনের সত্যবিরুদ্ধ ও মানবতাবিরুদ্ধ বিভিন্ন মিথ্যা মতবাদের বিজয়, অধর্ম উগ্রবাদের বিজয় বা বস্তুবাদি জাতীয়তাবাদের বিজয়- সত্য ও মানবতার পরাজয়।
বাংলাদেশে ডিসেম্বরে বিজয় দিবস পালন করা হয়, ইন্ডিয়া পাকিস্তান বার্মায় আগস্টে বিজয় দিবস পালন করা হয়। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা দিবসকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বড় রাষ্ট্র ভেঙ্গে ছোট রাষ্ট্র যে প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের অন্তরালে বিভিন্ন অশুভ রাজনৈতিক মতবাদ থাকে।
এক রাষ্ট্র ভেঙ্গে একাধিক প্রতিষ্ঠার পিছনে ধর্মের নামে উগ্রবাদ ও বস্তুবাদি জাতীয়তাবাদি চেতনার রাজনীতির কারসাজি কাজ করে। এতে বিভিন্ন অশুভ মতবাদ লাভবান হলেও সত্য ও মানবতার ধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
রাষ্ট্রের সাথে সবার জীবন ও সবার ধর্ম জড়িত। রাষ্ট্র একক ধর্ম একক জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক একক গোষ্ঠীবাদি হলে
সব মানুষের জীবন ও ধর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর কেবল ক্ষমতাসীনদের একক অন্যায় আধিপত্য স্বৈরতা কায়েম হয়।
ইতিহাসের দুর্ভাগ্যজনক পরিকল্পিত দুর্ঘটনা দেশ রাষ্ট্র দুনিয়ার সকল বিভক্তি সকল বর্ডার একক গোষ্ঠীর রাষ্ট্র ও মানবতাবিরুদ্ধ বিশ্বকাঠামো।
তারপরও আমরা অসহায় পরাজিত মানুষ জনগণ যে জনপদের যে রাষ্ট্রের যেখানে আছি যেখানে আমাদের নাগরিকত্ব এখনো যথটুকু আছে রক্ষার জন্য ভগ্নাংশ রাষ্ট্রও রক্ষা করতে হবে, তবে পিছনের বেদনাদায়ক ধ্বংসাত্মক ইতিহাসের ষড়যন্ত্র সম্পর্কও সজাগ থাকতে হবে।
কিসের ভিত্তিতে ডিসেম্বর বিজয়?
অথবা কিসের ভিত্তিতে 47আগষ্ট বিজয়?
এসব বিভক্তি কোন চেতনা- কোন মতবাদ- কোন জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বিজয়?
কোন রাজনীতির ভিত্তিতে মানবতার জয় পরাজয় নির্ধারিত হবে?
আমাদের বিজয় আমরা কিসের ভিত্তিতে বলবো ?
এই আমরা কারা?
আমরা বলার ভিত্তি কি?
এই আমরা কিসের ভিত্তিতে কে আমাদের শিখিয়েছে?
এটা কি ভাষাগত বিভেদ ভিত্তিক জাতীয়তাবাদি আমরা?
বাঙালি আমরা!
নাকি বস্তুবাদি আমরা?
না মুসলিম আমরা!
না হিন্দু আমরা!
না মানুষ আমরা?
একজন মুসলিমকে সব কিছুর উর্ধে ঈমানী বিবেচনা ও
ঈমানী ভ্রাতৃত্ব এবং মানবিক বিবেচনা মানবিক ভ্রাতৃত্ব সব ই হিসেবে রাখতে হবে, তেমনি একজন মানবিক মানুষকে ইতিহাসের সব কিছুই মানবতার ভিত্তিতে বিচার করতে হবে। যা কিছু মানবতার পক্ষে আমরা মুসলিম অমুসলিম সব মানবিক মানুষ সে সবের পক্ষে থাকবো আর যা কিছু মানবতা ধ্বংসাত্মক অমরা অবশ্যই সে সবের পক্ষে গিয়ে মানবতার শত্রু হতে পারি ন, মানবতাবিরুদ্ধ মানবতাবিধ্বংসী সব কিছুর বিরুদ্ধে আবস্থান ই মানবিক অস্তিত্ব এবং ধর্মীয় অস্তিত্ব।
রাজনৈতিক ময়দানে রাষ্ট্রীয় ময়দানে মানুষ আমরাই সবার জন্য কল্যাণকর আমরা হিসেবে বিবেচিত হওয়া জরুরী এবং একই সাথে মানবতার ধারায় ধর্মগত বিশ্লেষণ মূল্যায়নও থাকবে।
মানবিক পরিবেশ মানবাধিকার না থাকলে ধর্ম পালনও কঠিন হয়ে যায়।
47 পর্যন্ত এ উপমহাদেশের আমাদের সব মানুষের 'আমাদের দেশ' ছিলো বিশাল ইন্ডিয়া, তারপর ইসলামের শত্রু ও মানবতার শত্রু দেশের শত্রু মুসলিম লীগ নামের শয়তান লীগ ওয়াবিদের ধারায় ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদি ধ্বংসাত্মক সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির ধারায় আমরা বিশাল ইন্ডিয়া হারিয়ে পাকিস্তানি হলাম । পরাজয় বিভক্তিকে জয় বলে আমাদের শিখানো হলো।
এরপর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অন্যায় অবিচার স্বৈরাচার আর বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের আগ্রহে ইন্ডিয়ান সহযোগিতায় 'আমাদের' বড় দেশ পাকিস্তান' হারিয়ে সাত ভাগের এক ভাগ নিয়ে এক প্রদেশ এই এলাকাবাসীর আলাদা রাষ্ট্র বাংলাদেশ করা হলো।
পাকিস্তানি খুনি বাহিনীর হাতে তাদের পালিত দাস দালাল রাজাকারদের সহায়তায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হলো অনেক ধ্বংসযজ্ঞ হলো।
47 এর ধ্বংসাত্মক বিভক্তি 71 এর ধ্বংসাত্মক বিভক্তি সবকিছুকেই স্বাধীনতার নামে বিজয়ের নামে চালিয়ে দেয়া হলো।
একটা ভাষাগত বস্তুবাদি জাতীয়তাবাদি চেতনা সবার মনমগজে ডুকিয়ে আমরা মানুষ আমরা মুসলিম এটা গৌন করে ভিন্ন আমরা তৈরি করা হলো।
স্বাধীনতাকে কারাগার করে রাষ্ট্রকে একদল এক মতবাদ বাকশাল করা হলো। এখনো না আছে জীবনের স্বাধীনতা না আছে গণতন্ত্র না আছে মানবাধিকার।
47 পূর্ব হারানো নিজেদের দেশ পরের দেশ করে ফেলা বিশাল সেই তৎকালীন 'আমাদের দেশে'র এক টুকরাকে স্বাধীনতা বলে-
আবার 71 এ সেই ছোট টুকরা 'আমাদের দেশ' পাকিস্তানকে পরের দেশ করে সেটার ক্ষুদ্র এক টুকরাকে এই এলাকাবাসীর আবাস এই অঞ্চলকে রাষ্ট্র ঘোষণা করে আনন্দ বিজয় করতে বলা হলো।
এভাবে অপশক্তির কৃত ইতিহাসের সব দুর্ঘটনাকে বিভক্তিকে স্বাধীনতা বিজয় হিসেবে চালিয়ে আসলে কোন চেতনার কোন মতবাদের কিসের লাভ কার ক্ষতি হলো মানবিক দৃষ্টিতে হলেও তার বিচার মূল্যায়ন নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে প্রয়োজন।
যেটুকু আমরা উপমহাদেশের মানুষ হারিয়েছি তার দুঃখ বেদনা ক্ষতি যেমন ভূল রাজনীতির শিকার হিসেবে সত্য,
আর যেটুকু আছে যে এলাকাবাসীর রাষ্ট্র নামে আছে রাষ্ট্র থাকুক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে।
কারন অপশক্তির অপরাজনীতির ধারায় পরিস্থিতি ও মানসিকতার যেমন মারাত্মক পতন ঘটেছে তেমনি হারানো আগের আমাদের দেশ এখন চরম উগ্রবাদি অপশক্তির স্বৈরদস্যুতন্ত্রে পরিণত করা হয়েছে।
47 পূর্ব 'আমাদের দেশ' যেমন বিশ্রী অধর্ম উগ্রবাদের হিংস্র পাশবিক অপরাজনীতির বিষাক্ত পঙ্কে ডুবে মানবতার বধ্যভূমি গণতন্ত্রের গোরস্তান, তেমনি ৭১ পূর্ব 'আমাদের দেশে'র ঐ অংশও ধর্মের নামে হিংস্র ঘৃন্য তালেবানি অপশক্তির গ্রাসে সামরিক প্রভূদের দস্যুতার ক্রীতদাসত্বে জীবনের কারাগার কসাইখানা খুন গুম রাষ্ট্রীয়সন্ত্রাসের আখড়া মানুষের জন্য শ্বাসরুদ্ধকর পাশবিস্তান জানোয়ারিস্তান করে ফেলা হয়েছে। ওখানে জীবনের স্বাধীনতা দুঃসহ দুঃস্বপ্ন পাপ অপরাধ!
বারে বারে অনেক হারিয়ে এ জনপদের যতটুকু ভগ্নাংশ আছে এ অঞ্চলের মানুষের এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা অবশ্যই যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে,
অপশক্তির গ্রাস থেকে রাষ্ট্র বাঁচাতে হবে, ভিতরের বাইরের সব শত্রুদের সব মীরজাফরদের থেকে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা অস্তিত্ব বাঁচাতে হবে, জীবনের স্বাধীনতা উদ্ধার ও রক্ষা করতে হবে মানবতার রাজনীতি আর মানবতার রাষ্ট্র করে।
তবে অপরাজনীতির ভূলের ফসল ইতিহাসের এসব দূর্ঘটনা বিজয় বা স্বাধীনতা নাকি ঐতিহাসিক বিপর্যয় তা মূল্যায়ন প্রয়োজন মানবতার দৃষ্টিতে মানবতার রাজনীতির মাপকাঠিতে।
মানুষ হিসেবে মানবতার বিপরীত কিছু যেমন শুভ মনে করা যায়না তেমনি ঈমানদার ঈমানের বিপরীত কিছু দ্বীনের বিপরীত কিছুতেও আনন্দিত হতে পারেনা।
একমাত্র ইনসানিয়াত বিপ্লবের মাধ্যমেই সারা দুনিয়ায় সব মানুষের জন্য প্রাণাধিক প্রিয়নবীর দেয়া জীবনের স্বাধীনতা - মানবতার রাষ্ট্র ও মানবতার দুনিয়া গড়ার মাধ্যমেই সত্য ও জীবনের বিজয় সম্ভব, কেবলাভূমি সহ সারা দুনিয়াই সব মানুষের জন্য নিজের স্রষ্টার দেয়া নিজের দেশ নিজের দুনিয়া করে তুলি সব মানুষের জীবনের বিজয় মানবতার বিজয় সম্ভব। ধন্যবাদ।
============
- আল্লামা ইমাম হায়াত,
বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব,
World humanity revolution.
#Allama_Imam_Hayat #World_humanity_revolution
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks For You Comment