নাস্তিক তারাই যারা তাওহীদ রেসালাতকে অস্বীকার করে -আল্লমা ইমাম হায়াতের দিশা দর্শন অবলম্বনে লেখেছেন মোকাররম হোসাইয়ন


নাস্তিক তারাই যারা তাওহীদ রেসালাতকে অস্বীকার করে। নাস্তিকতা হলো এই তাওহীদ রেসালাত বলতে কিছু নেই। সবকিছু আপনা আপনি হয়ে গেছে, পরকাল জান্নাত জাহান্নাম বলে কিছু নেই আধ্যাত্মিকতা বলে কিছু নেই। কিন্তু সেটা মিথ্যা। তাওহীদ রেসালাতই সত্য, মূল সত্য বা পরম সত্য।

পৃথিবীতে কোন কিছুই আপনা আপনি হয় না। সাধারণভাবে আমরা একটা আর্ট দেখলেও বলি বাহ! কি সুন্দর আর্ট। কে আঁকছে? আর যিনি এই পৃথিবীর সবকিছু এত সুন্দর করে সাজালেন,  জন্মের সাথে সাথে মায়ের বুকে দুধ দিলেন নাস্তিকতা মূলত সেই তাওহীদকেই অস্বীকার।

যুক্তি আর জ্ঞান দুটো দুই জিনিস। যুক্তির উর্ধ্বে জ্ঞান। সাধারণভাবে পৃথিবীর কোন বিষয় সম্পর্কেই আমরা পরিপূর্ণ জানি না। আমাদের শরীরের একটা সেল কিভাবে তৈরি হয় কাজ করে তার গবেষণাও তো এখনো শেষ হয় নি। এমনকি শরীরের এমন অনেক অঙ্গ আছে যার কিছুই এখনও গবেষণা করে বের করতে পারেনি। আর যিনি এত সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, এই সীমিত জ্ঞান দিয়ে কিভাবে আমরা সেই তাওহীদকে বুঝব। প্রকৃতির দিকে তাকালেই তো বুঝা সম্ভব তাওহীদ আছে। আর নাস্তিকতা সেই তাওহীদকে অস্বীকার করে।

তাওহীদ সত্য তার বড় প্রমাণ সকল নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম ও তাঁদের দেওয়া জীবন ব্যবস্থা। নবী রাসুল আলাইহিমুস সালামের দেওয়া জীবন ব্যবস্থাই মানুষের জন্য সর্বোচ্চ কল্যাণ সব আলো সব সৌন্দর্য কল্যাণ দয়া ত্যাগ উদারতা জ্ঞান যুক্তি সেবা ভালোবাসা প্রগতি। সবকিছু রেসালাত থেকেই এসেছে এবং আসতে থাকবে। নাস্তিকতা সেই রেসালাতকেও অস্বীকার করে। এই জন্য নাস্তিকতা মানেই শুধু যে তাওহীদকে অস্বীকার তাই নয় রেসালাতকেও অস্বীকার।

এজন্য নাস্তিকতা মানেই মিথ্যা, অন্ধত্ব ও মূর্খতা। যেহেতু নাস্তিকতা মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং অলীক বা ভূয়া একটা বিষয় যার কোন ভিত্তি নেই সেহেতু সকল প্রকার অজ্ঞতা কুসংস্কার কুফর জুলুম পাশবিকতা সকল অন্যায় ব্যভিচারের মূল হলো নাস্তিকতা। সুতরাং নাস্তিকতাবাদ থেকে যা কিছু আসবে তা কিছু মানুষের অকল্যাণ ও ধ্বংস ছাড়া আর কিছু নিয়ে আসবেনা।

নাস্তিকতা থেকে কিভাবে বস্তুবাদ কায়েম হয়?

নাস্তিকতা মানে তাওহীদ রেসালাতকে অস্বীকার করা।

অর্থাৎ যারা নাস্তিক তারা তাওহীদ রেসালাত ও তাওহীদ রেসালাত তথা কলেমা থেকে আসা সকল কিছু অস্বীকার করে।

আমরা কেন নিজেদের আত্মসত্তা মুসলিম বলে পরিচয় দিই?

আমরা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দেই এজন্য যে আমরা তাওহীদ রেসালাতকে অর্থাৎ কলেমায় বিশ্বাস করি ও কলেমাকে ভালোবাসি। আমরা বিশ্বাস করি সকল গুণ, জ্ঞান, সভ্যতা, বিজ্ঞান, প্রগতি, সৌন্দর্য, কল্যাণ, মানবতার উৎস আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

এই জন্য আমরা নিজেদের মুসলিম বলি এবং কলেমা দেওয়া যে জীবন ব্যবস্থা তা আমরা গ্রহণ করি যা কিছু আমাদের জন্য হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা আমরা বর্জন করি এবং যা কিছু আমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে তা গ্রহণ করি এবং সেই মোতাবেক জীবন চেতনা ও সমস্তকিছু গড়ার চেষ্টা সাধনা করি।

 কিন্তু যেহেতু নাস্তিকরা কলেমা শরীফ তথা তাওহীদ রেসালাত অস্বীকার করে সেহেতু তারা কি বলবে আমরা মুসলিম এবং তারা কি বলবে আমরা কলেমার দেওয়া জীবন ব্যবস্থা গড়ব?
না।

নাস্তিকরা যেহেতু আল্লাহ আল্লাহর
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে স্বীকার করেনা, মানে না সেহেতু অবশ্যই তারা মুসলিম আত্মসত্তা বা পরিচয় দিবে না এবং সেই ভিত্তিক জীবন গড়বে না।

তাহলে তারা কিসের ভিত্তিতে পরিচয় দিবে এবং তাদের জীবন ব্যবস্থা কাকে কেন্দ্র করে হবে?

আল্লাহতায়ালা যা কিছু আমাদের কল্যাণের জন্য বা উপকারের ব্যবহারের জন্য সৃষ্টি করেছেন তাই বস্তু।
অন্যভাবে বলা যায় ভাষা, রাষ্ট্র আলো বাতাস মাটি পানি আগুন সূর্য পশু পাখি সবকিছুই বস্তু। বস্তু দৃশ্যমান আবার অদৃশ্যমান হতে পারে।

নাস্তিকতাবাদ কলেমাকে বা আল্লাহ আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে স্বীকার করেনা।
নাস্তিকরা কলেমা অস্বীকার তথা আল্লাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম কে বাদ দিয়ে দেয়। যদি কলেমা বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে
আর কি থাকে? আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুই থাকে।

তাহলে বুঝাজায় যারা নাস্তিক তাদের বস্তুভিত্তিক হতেই হবে যেহেতু আল্লাহ আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম কে বাদ দিলে বস্তু ছাড়া আর কিছু থাকেনা।

তাই যারা নাস্তিক তারা বস্তুকে অবলম্বন করে পরিচয় দিবে এবং জীবন ব্যবস্থা গড়বে।

অতএব বলা যায় বস্তুভিত্তিক আত্মপরিচয় ও জীবন ব্যবস্থার উৎসই হলো নাস্তিকতা।

এই বিষয়টি যদি আমরা বুঝতে পারি তাহলে অনেক বিষয় আমরা বুঝতে পারব।

কিভাবে নাস্তিকতা কায়েম থাকে কিভাবে নাস্তিকতা আমাদের গ্রাস করে কিভাবে কুফর জুলুম তৈরি হয় কিভাবে  মানবতাধ্বংস হয়।

বিঃদ্রঃ আল্লমা  ইমাম হায়াতের দিশা দর্শন অবলম্বনে

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাহাবী একটি বৈশিষ্ট্য, সাহাবী একটি চরিত্র, সাহাবী একটি আদর্শ, সাহাবী মানে উৎসর্গ, সাহাবী মানে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত! লেখক- আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিশার আলোকে- আল্লামা মুফতি রেজাউল মোস্তফা কায়সার

প্রিয়নবীর সম্পর্কের চেয়ে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান অপরিহার্য্য অন্য কোন সম্পর্কই নয় -"আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা"

(দলিল) নবী রাসূল আলাইহিস সাল্লাম গন সহ আল্লাহর ওলী গন চিরন্তন জীবিত ।